সাত বছরের আমি প্রায় প্রতিদিনই বাবার কাছে চিঠি লিখতাম, ছোট ভাই বাবু ছিল নিরব দর্শক।আমার পাশাপাশি সেও পৃষ্ঠা ভরে হাবিজাবি লিখত।
বাবু তখন নতুন নতুন নাম লিখা শিখেছে,সেই নাম যখন বাবু না হয়ে বুবা হয়ে যেত,আমরা বড় দুই বোন মুখ টিপে হাসতাম।
ছোট দু বোন অনেক ছোট,পিঠাপিঠি ওরা।দেড় আর আড়াই বছরের কাছাকাছি।তারাও হাসতো।
আমাদের বাবা ছিলনা, কিন্তু পাঁচ ভাইবোনের একটা আনন্দময় জগত ছিল গতবছর পর্য্যন্ত।আমরা হাজার কষ্ট উপেক্ষা করে ও হাসতে পারতাম ।
প্রবীন কোন মানুষ দেখলেই আমি অবাক হয়ে ভাবতাম,এরা কিভাবে বেঁচে আছেন,আব্বাতো তাদের অনেক ছোট!
কিছুদিনের মধ্যেই আমি বাবার চিঠি পাঠানোর ব্যবস্থাও মনে মনে করে ফেললাম।কাজটা বেশ কঠিন,চুপচাপ দ্রুত করে ফেলতে হবে! মৃত ব্যক্তির সাথে দিয়ে দিব সব চিঠি।কাজটা অনেক ভয়ের ছিল,আর কোন উপায়ও ছিলনা তখন।
এক বছরের মাথায় দাদা(বাবার মা) চলে গেলেন পুত্র শোকে কাঁদতে কাঁদতে, আমার গোলাপ গেল কই! বাচন গেল কই! বাবন গেল কই! কি ভয়ঙ্কর সেই কান্না!
আমার চিঠিগুলো দেওয়া হলোনা,কোন সুযোগ পেলাম না।
কয়েক বছর কাছের কারো মৃত্যু সংবাদ পেলাম না,আমার চিঠি জমতে থাকলো…
এখন আমি জানি মৃত্যুর কোন বয়স নেই।
গত বছরও এইদিনে বাবু কে ফোন দিয়ে খবর নিয়েছি,আম্মা কি করে,আব্বার মৃত্যু বার্ষিকী তে কিছু করছে কিনা! এ বছর আম্মা বাবু কেউ নেই!
আমি এখনও মনে মনে চিঠি লিখি!
আব্বা,আম্মা,বাবু ,অরিন, সবাই কে.. আমার কোন কাগজ বা কলম লাগেনা,যখন তখন সেই চিঠ তাদের কাছে পৌছে দিতে পারি। চিঠি লেখার সময় এখনও বাবু ছোটবেলার মত উকি দেয়।
আমি মনে মনে হাসি…
Send private message to author






