#দোষ

অফিস থেকে ফেরার পথে একটা শপিংমলে ঢুকলাম আমি আবার একটু ঘরকুনো টাইপের। সচরাচর বাহিরে বের হ‌ই না। বান্ধবী নিতুর জন্মদিন। ভাবলাম ওর জন্যে একটা ড্রেস নিয়ে যাই। ড্রেস দেখছিলাম হঠাৎ পেছন থেকে বলে উঠলো, “আরে রাত্রি না। কেমন আছো?” তাকিয়ে দেখলাম মায়ের বান্ধবী রেহেনুমা আন্টি।

– আসসালামু আলায়কুম, আন্টি।কেমন আছেন?

– এই তো ওপর আল্লাহর দয়ায় ভালোই আছি। কিন্তু তোমার কথা ভাবলেই মনটা খারাপ হয়ে যায়। আমি শুধু মাথা নাড়ালাম।

– কি করবা, বলো সব‌ই আল্লাহর ইচ্ছা। আল্লাহর ইচ্ছা ছাড়া কিছুই হয় না। মেনে নেও। দেখবা তোমার জন্য ভালো কিছু অপেক্ষা করছে। ওই শয়তান ছেলে তোমার যোগ্য‌ই ছিল না । তা বলছি তোমাদের ডিভোর্স হয়ে গেছে? আমি হালকা মাথা নাড়িয়ে বললাম, – জ্বী আন্টি । ছয় মাস হলো ডিভোর্স এর।

– থাক মা মন খারাপ করো না। এক বছর‌ও টিকলো না। পুরুষ মানুষ এমন‌ই হয়। আমাদের একটু মানিয়ে চলতে হয়। আর তুমিও নিজেকে একটু বদলাও। মেয়ে মানুষ একটু সাজগোজ করবা ।নাহ শুধু পড়াশুনা‌ই করে গেলে। একটু স্বামীর সামনে একটু সুন্দর হয়ে থাকতে তাহলে আজ সংসার টা ঠিকতো।

আন্টির কথা শুনে আমি একটা মুচকি হাসি দিয়ে চলে আসলাম।

রাস্তায় হাঁটছি আর ভাবছি সত্যিই কি আমার নিজেকে পাল্টানোর দরকার?

অভ্র আর আমার বিয়ে পারিবারিক ভাবেই হয়। সবকিছু ঠিক‌ই চলছিল। বিয়ের তিনমাস পর হঠাৎ আমাকে বাবার বাসায় রেখে আসে। তার ঠিক দশ দিন পরে অভ্র জানায়, সে বিয়েটা করছিল তার গার্লফেন্ড্র এর ওপর প্রতিশোধ নিতে। এখন সে ফিরে এসেছে নিজের ভুল বুঝতে পেরে। তারপক্ষে এ সম্পর্ক continue করা সম্ভব নয়। অভ্র ডিভোর্স চায়। সেদিন সব শুনে আমি চুপ ছিলাম। আমি বুঝতে পারি নি আমি কি বলবো। সবাই আমাকে সেদিন আড়ালে সামনে অনেক কথাই বলছিল। আত্নীয়স্বজন , পাড়া প্রতিবেশী সবার কাছে আমি তখন মুখোরচক গল্প। কেউ সহানুভূতি দেয় ,কেউ বা সহানুভূতির আড়ালে আমার দোষগুন‌ও বিচার করে যায়।

আমার কান্না পাচ্ছে। খুব কান্না পাচ্ছে। চিৎকার করে বলতে ইচ্ছে করছে , আমার কোনো দোষ নেই।

Writer- Orthy Akhter

Send private message to author
What’s your Reaction?
0
0
0
0
1
0
0
Share:FacebookX
4.5 2 votes
Article Rating
Subscribe
Notify of
guest
0 Comments
Oldest
Newest Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments

Locbook Platform

Locbook is an independent platform for aspiring writers

error: Content is protected !!