স্কুল জীবনে আমার এক বন্ধু ছিলো, তার নাম শাহীন। ছোট খাটো চেহারার শাহীনেরর সাথে দুইদিন মিশেই বুঝতে পেরেছিলাম এর মতো খচ্চর একশ বছরে একটা পয়দা হয়, তার চরিত্রে কিপ্টামু, ছ্যাচড়ামু, এবং চোট্টামু স্বভাব সর্বদা বিদ্যমান থাকে। টিফিনে সবার থেকে খাবে কিন্তু নিজে কাউকে খাওয়াবে না, আর চান্স পাইলেই আমাদের নতুন কলম,ডাইরি স্কেল মেরে দিবে।
ইবলিশের এই মিনি ভার্সনকে টাইট দেওয়ার জন্য এবারে আমি একটা ফন্দি করলাম, স্কুলের বিদায় প্রোগামে আমরা বরাবর নাটক করি,এবারে নাটকে শাহীনকেও নেওয়া হলো। নাটকের কাহিনি অনুযায়ী আমি বাড়ির মালিক আর শাহিন আমার বাড়ির কাজের লোক, সে মারাত্মক কিছু বোকামি করে আর আমি তাকে প্রতি ভুলে একাটা করে চড় মারি।
রির্হাসেলের সময় আমি আস্তে আস্তে মারতেছিলাম, কিন্তু প্রোগামের দিন স্টেজে ওঠার পর আমার মাইরের স্পিড বাড়তে থাকে। তারপর ধীরে ধীরে মারের স্পিডের সাথে একটার জায়গায় দুইটা করে মারতে থাকি, শাহীন চোখ মুখ লাল করে কাঁদো কাঁদো হয়ে ডায়লোগ দিতে থাকে, দর্শকরা সবাই ভাবে শাহীন অভিনয় করে কাঁদতেছে । চড় মেরে যে ব্যাপক আনন্দ পাওয়া যায় তা আমি ইতিমধ্যে বুঝে গেছি, চূড়ান্ত ভাবে আমি আমার হাতের সুখ মিটানোর জন্য নাটকের শেষ সীনে শাহীনের গালে ম্যারাথন চড় থাপ্পর দেওয়া শুরু করলাম, এবার শাহীন আসমান জমিন কাপায়ে ফেলে “বাবা গো মা গো ” বলে চিৎকার শুরু করে দিলো । শাহীন চরম অভিনয় করতেছে ভেবে গোটা অডিয়েন্স তালি আর অট্টহাসিতে ফেটে পড়লো, প্রিন্সিপাল তার ছাত্রদের এমন জীবন্ত অভিনয় দেখে উত্তিজিত হয়ে দাড়ায়ে তালি দিতে শুরু করেছেন। স্টেজ থেকে নামতেই ক্লাসের সবাই ও স্যার ম্যাডামরা শাহীনকে তার অসাধারন অভিনয়ের জন্য বাহবা দিলো। শাহীন লাগাতার চড় থাপ্পর খাওয়ার পরপরই এমন বাহবা পেয়ে কিছুক্ষনের জন্য ভ্যাবদা মেরে গেছে, একটু স্থির হওয়ার পর তার চড় খাওয়া গালে বরফ দিতে দিতে আমাকে বললো
- বন্ধু তুই এমনে আমারে মারতে পারলি???
- আরে বেটা চরিত্রের মধ্যে ঢুকে গেলে এগুলা খেয়াল থাকে নাকি? , আর দেখ মার খাওয়ার কারনেই গোটা স্কুল শুধু তোর অভিনয়ের প্রশংসা করতেছে।
এবার শাহীন একটু খুশি হয়ে বললো – আচ্ছা তাইলে ঠিক আছে যা তোরে মাফ কইরা দিলাম।
Kuntol Hosen
Send private message to author







নিদারুন