ব্রিটিশ সেনারা বিদায় নিলেন সাতচল্লিশ সালে,
তারপর এলো পাকিস্তানিরা সংকটময় কালে।
তখন থেকেই এই দেশ হয় পূর্ব পাকিস্তান,
দেশ শাসনের দায়িত্ব নেন লিয়াকত আলী খান।
তিনি বললেন “তোমাদের দেবো সমুচিত অধিকার,”
এই কথা শুনে খুশি হয়েছিল জনগণ বাংলার।
এদেশের লোক তাদের এমন কথা বিশ্বাস করে,
নতুন স্বপ্নে বুক বেঁধেছিল বেঁচে থাকবার তরে।
কিছুকাল পর বোঝা হয়ে যায়, সব ছিলো প্রহসন,
পাকিস্তানিরা ভেঙে দিতে চায় বাঙালি জাতির মন।
শুরু হয়ে যায় দমন-পীড়ন বাঙালি জাতির পরে,
এদিকে বাঙালি বঞ্চিত হয়ে ক্রন্দন করে মরে।
তারা সর্বদা বাঙালি জাতিকে করতে চেয়েছে মূক,
গুলির আঘাতে ঝাঁঝরা করেছে বাংলা মায়ের বুক।
সরকার আসে সরকার যায়, এক থেকে যায় নীতি,
বাঙালি জাতিকে দমন করাই হয়ে ওঠে যেন রীতি।
এভাবে দমন চলতে চলতে দুই যুগ পর এসে,
ইয়াহিয়া খান সামনে এলেন রাষ্ট্রপতির বেশে।
সত্তরে হয় প্রধানমন্ত্রী হবার নির্বাচন,
শেখ মুজিবকে ভোট দেয় সব বাংলার জনগণ।
এদিকে এ ভোটে ভুট্টো সাহেব শোচনীয়ভাবে হারে,
বাঙালির কাছে এই হার তারা মেনে নিতে নাহি পারে।
তাই তারা চালা শুরু করে দেয় রাজনৈতিক চাল,
আস্তে আস্তে বোনা শুরু করে ষড়যন্ত্রের জাল।
শেখ মুজিবকে ক্ষমতা প্রদানে গড়িমসি করে তারা,
গদি ছেড়ে দেয়া সম্ভব নয় হয়তো তাদের দ্বারা।
বাঙালি এবার বুঝে যেতে থাকে, চলবে না পেলে ভয়,
তাদের সঙ্গে মিলেমিশে থাকা আর সম্ভব নয়।
পরের বছর একাত্তরের শুরুর সময় থেকে,
যত দিন যায় পাকিস্তানিরা তত যেতে থাকে বেঁকে।
উক্ত সালের সাত’ই মার্চে মুজিবুর রহমান,
বজ্রকণ্ঠে মুখর করেন রেসকোর্স ময়দান।
তাঁর এ ভাষণে স্বাধীনতা যেন হতে থাকে বিকশিত,
বাঙালি জাতিকে মুক্তির সুরে করেন উজ্জীবিত।
এদিকে জনাব ইয়াহিয়া খান ভয়াতুর দুটি আঁখে,
বাঙালি জাতিকে ধ্বংস করার মতলব এঁটে রাখে।
তার নির্দেশে হঠাৎ এ দেশে পঁচিশ তারিখ রাতে,
পাকিস্তানের সৈন্যবাহিনী প্রহরণ নিয়ে হাতে-
শান্ত-নিরীহ বাঙালির পরে ঝাঁপিয়ে অতর্কিতে,
বিবেকে বাধেনি বহু বাঙালির গুলি করে প্রাণ নিতে।
হত্যাযজ্ঞ শেষ হয়ে গেলে তার পরদিন প্রাতে,
চারিদিকে শুধু লাশ পড়ে থাকে রাস্তাতে রাস্তাতে।
শেষ পর্যায়ে পৌঁছায় যেন তাদের অত্যাচার,
এই ঘটনায় সারা দেশ জুড়ে ঝড় ওঠে নিন্দার।
এমন সময়ে বেতার যন্ত্রে আসে সন্ধ্যার ক্ষণে-
দেশ স্বাধীনের ঘোষণা, যা শুনে খুশি হয় জনগণে।
তারিখটি ছিল ছাব্বিশে মার্চ, যেদিন মোদের দেশে,
আকাশে বাতাসে উঠেছিল যেন মুক্তির সুর ভেসে।
তারপর থেকে প্রতিটি বছর জমকালো পরিবেশে,
দিনটি পালিত হয় স্বাধীনতা দিবস হিসেবে দেশে।
Written by Shibli Sayeek (শিবলী সাইক)
Send private message to author






