হাইওয়ে ধরে এগিয়ে চলেছে মাইক্রোবাসটা।ভিতরের হই হট্টগোল,গান,গল্প,হাসাহাসি,ঝগড়া বাইরেও ভেসে ভেসে আসছে।একদল টিনেজ কিশোর কিশোরী মাইক্রোবাসের যাত্রী,সবাই তারা কাজিন।দুয়েকজন বন্ধুবান্ধব ও আছে।সবাই মিলে পিকনিক শেষে ফিরে যাচ্ছে বাড়ি।পড়ন্ত বিকেলে একদল টিনেজারের এরকম হৈ হুল্লোড় করাটাই স্বাভাবিক।
কিন্তু এসবের মাঝেও খুব শান্ত ভাবে জানালা দিয়ে প্রকৃতি দেখছে এক কিশোরী।এসব হট্টগোল তার ভাল লাগে না।বিকেলের কনে দেখা রোদ পড়েছে মুখে,বাতাসে এলোমেলো হয়ে যাচ্ছে তার চুল।সে এসব ভীষণ উপভোগ করছে।পিছনের দিকে ছুটে চলা গ্রাম,ফসলের মাঠ,রাখাল,কচুরিপানা ফুল ভর্তি পুকুর-এসব দেখে দেখে সে বিমোহিত।হঠাৎ চোখ ফেরাতেই দেখে রিয়ার ভিউ মিররে আরো এক জোড়া চোখ।সেই চোখেও মুগ্ধতা।তবে এই মুগ্ধতা প্রকৃতি দেখে নয়,এ অন্য কিছু।চোখে চোখ পড়তেই ডুব।কিছুক্ষণ পরে আবারও চুরি করে দেখা।এভাবে দু জোড়া চোখের লুকোচুরি চলতে লাগল।বয়ে গেল এক ঝলক প্রেম প্রেম হাওয়া আর তাতে ঊড়ে গেল এক জোড়া মন।
বিশ বছর পর
সেই কিশোরী আজ পরিপূর্ণ নারী,সংসারী।পারফেক্ট ঘরণী,মা,বৌ।সংসার তার ভালবাসা আর সুখে পরিপূর্ণ।
কিন্তু!
আজও গাড়ির রিয়ার ভিউ মিররে চোখ পড়লে কেমন বুক ভার লাগে,চোখ জ্বালা করে।স্মৃতিপটে ভেসে ওঠে এক জোড়া মুগ্ধ চোখ _পথ চলতে গিয়ে যে চোখ জোড়া হারিয়ে গেছে কোথায় যেন!জীবনের বাস্তবতায় সে নিজেও তো প্রায় ভুলতে বসেছে সেই চোখের মালিক কে।তাহলে কেন গাড়িতে বসলেই চোখ চলে যায় রিয়ার ভিউ মিররে?আয়নার ঐ চোখের ছায়া মুছে গেলেও মনের আয়নায় পড়া ছায়া কেন মুছে যায় না?







