স্নিগ্ধ বিকেল। হলদে আকাশটা ঘোলাটে হয়ে আসছে। মেঘেদের মিলনমেলা খুব শীঘ্রই হতে যাচ্ছে।মিহী বাতাসে সবুজের আলোড়ন।এক ঝাক পাখি উড়ে যাচ্ছে নিরলসভাবে। নীড়ে ফেরার তাড়া খুব দ্রুতই সেরে ফেলছে এরা। ব্যাতিক্রম শুধু আমজাদ আলী লেনের সম্মুখে।একরাশ গাম্ভীর্য নিয়ে বসে আছে এক আগন্তুক।যার কাছে প্রকৃতির এসব খেলা বড়ই তুচ্ছ। তার প্রয়োজন মানব শরীর। খুন নামক শব্দকে তার উপর প্রয়োগের গভীর ভাসনা।
কালো হুডির নিচে চেহারার সামনে কালো মাস্ক।অদ্ভুত রহস্যময়ী মনে হয় সামনে থেকে দেখলে।চোখ দেখা দায়।হুডির ক্যাপ নামক অংশটি চোখের নিচে এসে জায়গা দখল করে বসে আছে।আগন্তুক ধীর গতিতে মানব শরীরটির দিকে এগুচ্ছে। কি মনে করে আগন্তুক থেমে গেলো। পেন্টের বাম পকেটে হাত দিয়ে সিগারেটের প্যাকেটটি হাতে নিলো।আগন্তুক সিগারেট ধরালো।এটাই নাকি তার নিয়ম! কোনো হত্যাকান্ড চালোনোর পূর্বশর্ত সিগারেটের ধোয়ায় নিজেকে খানিকটা আড়াল করে নেয়া।আচমকা আগন্তুক লক্ষ করলো মানব শরীরটি উধাও। উম্মাদের মতো খুঁজতে লাগলো সে।
রাত ১টা। দূর হতে ভেসে আসছে অতৃপ্ত কুকুরদের আর্তনাদ। দু একটা খুব কাছেই নিজেদের অস্তিত্বের জানান দিচ্ছে। আমজাদ আলী লেনের ভেতর থেকে আগন্তুক বের হয়ে আসছে। লম্বা পা ফেলে দ্রুত গতিতে হেটে যাচ্ছে সে।বেশ ক্লান্ত লাগছে আজ নিজেকে।সোডিয়াম লাইটের আলো পড়ে শরীরটাকে হলদে করে দিচ্ছে।হঠাৎ কি মনে করে ফুটপাতের উপর হাঁটা শুরু করলো সে।
ফুটাপাতের উপর দেয়ালের পাশে এক বৃদ্ধ কাঁথা গায়ে দিয়ে নাক ডাকছে। আগন্তুক প্যান্টের পকেট থেকে রিভলবার হাতে নিলো। বৃদ্ধ লোকটার পাঞ্জাবীর পকেটে সেটি খুব যত্ন করে গুজে দিলো। কাল সকালে বৃদ্ধ লোকটা যখন দেখবে তার পাঞ্জাবীর পকেটটা ভারী হয়ে আছে। তখন নিশ্চয়ই আগামিকাল তার জীবনের সবচেয়ে ভয়ংকর দিন হবে।মৃত্যু ছুঁই ছুঁই মানুষগুলো কি সব সময় ভীত হয়? আগুন্তক ভাবে…
– সৌরভ আহমেদ
Send private message to author






