বাবা

রেহনুমার আজ বিয়ে হয়েছে। ও ওর শ্বশুরের সামনে বসে আছে। শ্বশুরের সাথে কথা বলতে ওর ভালো লাগছে। ষাটোর্ধ্ব মানুষটার চেহারা ও কথাবার্তায় কেমন যেন ‘আপন-আপন’ একটা ব্যাপার আছে।
রেহনুমা ওর বাবার সাথে কখনো সহজ হতে পারে নি। ছোটোবেলা থেকে ও ওর বাবাকে যা-ই বলতো, তা-ই ওর বাবা এক কথায় ‘না’ করে দিত।
‘বাবা পুতুল কিনব।’
‘না।’
‘বাবা চকোলেট খাব।’
‘না।’
‘বাবা বেড়াতে যাব।’
‘না।’
‘বাবা গাছে উঠব।’
‘না।’
‘বাবা বৃষ্টিতে ভিজব।’
‘না।’
রেহনুমার সাথে কথা বলার সময় ওর বাবার মুখ দিয়ে ‘না’ ছাড়া কোনো শব্দ বেরোতোই না! ভাইয়াকে অবশ্য বাবা অনেক ছাড় দিয়েছেন।
রেহনুমার মা-ও কেমন যেন করতেন। উনি বলতেন,”মেয়ের ছাই, ভাতে দিয়ে খাই!” অর্থাৎ, উনি বলতে চাইতেন, মেয়েরা স্রষ্টার এক গুরুত্বহীন সৃষ্টি!
মোট কথা বাবার বাড়িতে রেহনুমার দিনগুলো খুব একটা আনন্দে কাটে নি। তাই যখন আকিবের সাথে ওর বিয়ের কথাবার্তা শুরু হয়েছিল, তখন ও বেশ খুশিই হয়েছিল।
হ্যাঁ, অনেক মেয়ের মধ্যেই শ্বশুর বাড়ি নিয়ে একধরনের ভয় কাজ করে। ভয়টা সবক্ষেত্রে অমূলকও নয়।
রেহনুমার মনে সেরকম কোনো ভয় ছিল না। এই কয়েক ঘণ্টা শ্বশুর-শাশুড়ি, ননদের সাথে কথা বলে ওর ভালোই লেগেছে। কয়েক ঘণ্টায় মানুষ চেনা যায় না অবশ্য।
রেহনুমার শ্বশুর মামুন সাহেব উচ্চস্বরে বলতে লাগলেন,”আমার বোকা ছেলেটা গেল কই? আকিব,এই আকিব।
মেয়েকে সারারাত তার বাপের সামনে বসিয়ে রাখলে, এতো পয়সা খরচ করে তোর ঘর সাজালি কেন? নিয়ে যা, নিয়ে যা। আমার মামণিকে ঘরে নিয়ে যা।”

আকিবের এক পরিচিতের মাধ্যমে ও একটা বেসরকারি কোম্পানির রিসিপশনিস্ট হিসেবে রেহনুমার একটা চাকরি জোগাড় করে দিয়েছে।
রেহনুমার বাবা-মাকে যদি ও বলতো, “আমি চাকরি করব।” রেহনুমা নিশ্চিত, উনারা একসাথে বলতো, “না।”
রেহনুমার শ্বশুর-শাশুড়ি অসাধারণ। ওরা রেহনুমার চাকরি করার ব্যাপারটায় পূর্ণ সমর্থন দিয়েছেন।
মাঝে মাঝে মনে হয়, ব্যাপারটা নিয়ে রেহনুমা কিংবা আকিবের চেয়ে উনারাই যেন বেশি খুশি।
রেহনুমার অফিস ওর শ্বশুরবাড়ি থেকে খুব যে বেশি দূরে তা না। অফিসে যেতে কতোক্ষণ সময় লাগবে- সেটা ট্রাফিক জ্যামের উপর নির্ভর করে। জ্যাম থাকলে ৪০-৪৫ মিনিট সময় লাগে, নয়তো ১৫-২০ মিনিটেও যাওয়া যায়।
রেহনুমার অফিসের পরিবেশ মোটামোটি ভালোই। রিসিপশনিস্টকে যেহেতু ফ্রন্ট ডেস্কে বসতে হয়, দায়িত্ব ও কাজের চাপ দুটোই বেশি থাকে।
অফিসের সহকর্মীরা বেশ আন্তরিক। শুধু মাঝে মাঝে ম্যানেজার স্যার আর অফিসের একজন গেটম্যান সকলের অগোচরে কেমন করে যেন ওর দিকে তাকায়।
রাস্তা-ঘাটে এমন কতো পুরুষ মানুষই তো মেয়েদের দিকে এভাবে তাকায়। এতে পাত্তা দেয়ার কিছু নেই।

রেহনুমা গোসল করে, চুলে তোয়ালে জড়িয়ে ওয়াশরুম থেকে বের হয়ে দেখল আকিব বসে আছে। আকিবের মুখটা কালো হয়ে আছে। কোনো দুঃসংবাদ আছে হয়তো।
ও আকিবের পাশে বসে বলল, “কী হয়েছে? মন খারাপ?”
আকিব একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে বলল, “আমার চাকরিটা চলে গেছে রেণু। চীন থেকে কী এক রহস্যময় করোনাভাইরাস এল। সারা বিশ্বের অর্থনীতিকে একদম পঙ্গু করে দিচ্ছে। কিছু গার্মেন্টস কোম্পানি বন্ধ হয়ে যাচ্ছে, কিছু কোম্পানি লোক ছাঁটাই করছে। আমাদের কোম্পানিটা বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। আমি,আমরা অকূল পাথারে পড়লাম রেণু।”
আকিবের গলা ধরে আসছে। রেহনুমা পরম মমতায় ওর স্বামীর মাথায় হাত বোলাতে লাগলো। আকিবের চুলগুলো রুক্ষ হয়ে গেছে। মানুষটা বোধহয় অনেকদিন চুলে শ্যাম্পু করে না।
সাজুগুজু করে স্বামীর পাশে শুয়ে ফেসবুক, ইন্সটাগ্রাম আর ইউটিউব চালালেই কিন্তু ‘স্ত্রী’ হওয়া যায় না। স্বামীর দুঃসময়েই একজন নারী সত্যিকারের ‘স্ত্রী’ হয়ে উঠে। আকিবের দুঃসময়ে রেহনুমা ওর সত্যিকারের স্ত্রী হয়ে উঠবে।
রেহনুমার একটা হাত ধরে আকিব বলল, “বাবা-মাকে এখন কিছু বোলো না রেণু। বিষয়টা শুধু আমার আর তোমার মধ্যে থাকবে। আমি প্রতিদিন অফিস টাইমে বের হব, সন্ধ্যায় ফিরব। চাকরি খুঁজবো। কেউ কিছু বুঝবে না।”
রেহনুমা বলল, “তুমি যা বলবে তাই হবে। আমি আছি তো তোমার পাশে।”
আকিব বলতে লাগলো, “আর রেণু শোনো, যতো যা-ই হোক তুমি কিন্তু এই মুহূর্তে তোমার চাকরিটা ছেড়ো না, প্লিজ।”
রেহনুমা আকিবকে জড়িয়ে ধরল। এইমুহূর্তে ওকে একটা বাচ্চা ছেলে বলে মনে হচ্ছে। রেহনুমা বলল, “ছাড়বো না আমি চাকরি। তুমি টেনশন কোরো না। ইউ আর কোয়ালিফাইড। খুঁজলে নিশ্চয়ই আরেকটা চাকরি পেয়ে যাবে।”

করোনা পরিস্থিতি নাকি সরকারের নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাচ্ছে। আগামীকাল থেকে এক সপ্তাহের লকডাউন ঘোষণা করা হয়েছে। লকডাউন আরো বাড়তে পারে।
রেহনুমার অফিসের সহকর্মীরা আজ একটু আগেভাগেই অফিস ছেড়ে চলে গেছে। হাতের কাজ শেষ না করে রেহনুমা উঠতে পারছে না।
ম্যানেজার স্যার বেশ কয়েকটা ফাইল রেহনুমার টেবিলে রেখে বলল, “আজ এগুলো ‘দেখে দিয়ে’ তারপর বাড়ি যাবেন।”
রেহনুমা ফাইলগুলো খুলে দেখল। এ ফাইলগুলো ওর দেখার কথা না। ম্যানেজার স্যার ওকে অফিসে আটকে রাখতে চাচ্ছেন। কিন্তু কেন?
সামনের ডেস্কের বাবুল সাহেব উঠে চলে গেলেন। এখন এই অফিসে শুধু রেহনুমা, ম্যানেজার স্যার আর বাজেভাবে তাকানো গেটম্যানটা আছে। রেহনুমা বিপদের গন্ধ পাচ্ছে।
আকিবকে ফোন দিতে পারলে ভালো হতো। আকিব গিয়েছে নারায়ণগঞ্জ। একটা গার্মেন্টস কোম্পানিতে ইন্টারভিউ দিতে। ও এখানে দ্রুত আসতে পারবে না।
রেহনুমা কি ওর বাবাকে ফোন দেবে? একটু পর সন্ধ্যা হবে। পবিত্র কোরআনে ‘সালাতুল উস্তা’র উল্লেখ আছে। বেশিরভাগ আলেম ওলামাগণ আসরের সালাতকে সালাতুল উস্তা বলে উল্লেখ করেছেন। এ সময় দোয়া কবুল হয়।
আসরের পর থেকে মাগরিব পর্যন্ত রেহনুমার বাবা মোবাইল বন্ধ রেখে ইবাদত-বন্দেগী করতে থাকেন। তাকে ফোন দিয়ে লাভ নেই।
ফোন খোলা থাকলেও লাভ হতো না। বাবা হয়তো ওকে নিয়ে যেত ঠিক ই। কিন্তু এরপর ওর চাকরি করার উপর কঠোর নিষেধাজ্ঞা জারি করতো।
রেহনুমা কি ওর শ্বশুরকে ফোন দেবে? শ্বশুর তো বাবাই। এদেশের পুত্রবধূরা কি রেহনুমার মতো বিপদে পড়লে তাদের ‘শ্বশুর’ নামক বাবাকে ফোন দিতে পারে?

আসরের নামাজ পড়ে খোরশেদ সাহেবের সাথে মামুন সাহেবের দেখা হয়ে গেল।
খোরশেদ সাহেব বললেন, “আরে মামুন সাহেব, আপনার লাল দাঁড়ির মাঝখান দিয়ে সাদা দাঁড়ি উঁকি দিচ্ছে দেখি। ভাবী যত্ন কম নিচ্ছে নাকি?”
মামুন সাহেব হেসে বললেন, “আপনার ভাবী তো ‘অবসরে’ গেছে। এখন এই বুড়ো খোকাটাকে দেখার দায়িত্ব আমার বৌমা নিয়েছে।
বৌমা এতো বেশি যত্ন করে যে, তা সহ্য করতে না পেরে দু-চারটে দাঁড়ি সাদা হয়ে গেছে!”
কথা বলতে বলতে দুই প্রৌঢ় মসজিদের বাইরে এসে দাঁড়িয়েছেন। কী সুন্দর নীলাকাশ, মিষ্টি বাতাস। পৃথিবীটা বড্ড সুন্দর। বয়স যতো বাড়ে, পৃথিবীটাকে ততো বেশি সুন্দর কেন লাগে কে জানে।
মামুন সাহেবের ফোন বেজে উঠল। রেহনুমা ফোন করেছে। ও কাঁপা কাঁপা কন্ঠে বলে উঠল, “বাবা, আপনি আমার অফিসে এই মুহূর্তে আসতে পারবেন? আমি বিপদে পড়েছি।”
মামুন সাহেব বললেন,”মেয়ে ডাকলে বাবা না গিয়ে পারে? তুমি তোমার অফিসের অ্যাড্রেসটা এসএমএস করে দাও। আর ভয় পেয়ো না মা। আল্লাহকে ডাকো। রক্ষা করার মালিক আল্লাহ।”
মামুন সাহেব একটা রিকশা ঠিক করলেন। তিনি রিকশাওয়ালার পিঠে হাত রেখে বললেন, “বাবা গো। আমার মেয়েটা বড় বিপদে। দ্রুত আমাকে ওর কাছে নিয়ে চলো।”
রিকশাচালক করিম মিঁয়া একটু আগে দুটো কলা খেয়েছে। কলা খাওয়ার জন্যই হোক কিংবা এই দাঁড়িওয়ালা বুড়া চাচা পিঠে হাত রাখার জন্যই হোক, করিম মিঁয়ার নিজেকে শক্তিশালী বলে মনে হচ্ছে। ও বলল, “চিন্তা কইরেন না চাচা। মোর রিকশা অহন উড়ালপঙ্খীর মতো উড়বো।”

রেহনুমার ইচ্ছে করছে ফাইলগুলো ম্যানেজার সাহেবের মুখের উপর ছুঁড়ে ফেলে এক্ষুণি চাকরিটা ছেড়ে দিয়ে চলে যেতে। আকিবের এখন চাকরি নেই।
হুট করে চাকরিটা ছেড়ে দেয়া যাবে কি না- রেহনুমা ঠিক বুঝতে পারছে না।
সদ্য চাকরি হারানো বেকার স্বামীদের স্ত্রীরা চাইলেও অনেক কিছু করতে পারে না।

রেহনুমার অফিসের ম্যানেজার ইকবাল হোসেন চৌধুরি সে-ই কিশোর বয়স থেকেই একটু মোটা মেয়েদের পছন্দ করেন। আগে রিসিপশনে তানিয়া নামে যে মেয়েটা বসতো, ও ছিল প্রচন্ড স্টাইলিশ। জিরো ফিগার ছিল ওর। অনেক পুরুষই এ ধরনের নারীদের পছন্দ করে। ইকবাল চৌধুরি ব্যতিক্রম।
ইকবাল চৌধুরির পছন্দ বর্তমান রিসিপশনিস্ট মিসেস রেহনুমার মতো একটু মোটা ধাঁচের মেয়েদের।
মিসেস রেহনুমা সদ্য বিবাহিত। সদ্য বিবাহিত নারীদের শরীর থেকে অন্যরকম একটা সুগন্ধ আসে। গন্ধটা ইকবালের ভালো লাগে।
ইকবাল চৌধুরির মনে হয়, নারী মানেই পুরুষ্ট স্তনযুগল আর নিতম্বের অধিকারিণী। তার কপাল খারাপ। তার স্ত্রীর ঐ অঙ্গগুলো এতোটাই ‘শুকনো’ যে মাঝে মাঝে মনে হয় ওগুলো খুঁজে পেতে ম্যাগনিফাইং গ্লাসের সাহায্য নিতে হবে!
মিসেস রেহনুমার ঐ অঙ্গগুলো বেশ আকর্ষণীয়। ওগুলোকে স্পর্শ করার জন্য ইকবাল চৌধুরি বেশ কিছুদিন ধরে খুব সুন্দর একটা পরিকল্পনা তৈরি করেছেন। আজ সেই পরিকল্পনা বাস্তবায়নের দিন।
ইকবালের এসব ‘কাজের’ ডানহাত গেটম্যান অলিউরকে দিয়ে ও আগেই গুলশান থেকে একবোতল দামী বিদেশি ব্র্যান্ডের মদ কিনে এনেছে। মদ খেলে শরীরে একটা ‘জোশ’ আসে, ভয়-ডর কিংবা বিবেকবোধ জানালা দিয়ে উড়ে পালায়।
ম্যানেজার স্যার তার রুম থেকে বের হয়েছেন। তিনি অপ্রকৃতিস্থের মতো হাঁটছেন। রেহনুমার নিজেকে মাকড়সার ফাঁদে আটকে পড়া মাছি বলে মনে হচ্ছে।
ওর হাত-পা ঠান্ডা হয়ে আসছে।
ও মনে মনে বলল,”বাবা কোথায়? আমার বাবা?”

করিম মিঁয়া মিথ্যে বলে নি। উনি খুব দ্রুত মামুন সাহেবকে রেহনুমার অফিসে নিয়ে এলেন। করিম বললেন, “চাচা, আপনি উপরে যান। আমি আছি। ভাড়া আইসা দিয়েন। লাগলে আমারে ডাক দিয়েন। রিকশা আমার আল্লাহয় দেখবো।”

মামুন সাহেব দ্রুত উপরে উঠে গেলেন। রেহনুমার অফিস তিন তলায়। লিফট বন্ধ। তিনি হেঁটেই উপরে উঠে গেলেন।
দ্রুত তিন তলায় উঠে হাঁপাতে থাকা মামুন সাহেবকে আটকালো অফিসের গেটম্যান, ম্যানেজার ইকবালের ডানহাত। মামুন সাহেব রেগে বললেন, “সরো। আমি আমার মেয়েকে নিতে এসেছি।”
নিজের রাগত কণ্ঠ শুনে মামুন সাহেব নিজেই অবাক হয়ে গেলেন। হতভম্ব গেটম্যান তাকে বাধা দিতে পারলো না।

মদ্যপ ইকবাল চৌধুরি রেহনুমার ডেস্কের খুব কাছে চলে এসেছেন। কিছুক্ষণের মধ্যেই এখানে একটা খণ্ড প্রলয় হবে। ভিডিও হবে, থ্রেট দেয়া হবে, আত্মগোপনে থাকা হবে, পুলিশ, আদালত আর সাংবাদিকদের পেছনে কিছু খরচা-পাতি করা হবে…………
হঠাৎ ইকবাল সাহেব শুনলেন বেরসিকের মতো একটি ডাক, “মা, মা রে।”
রেহনুমার মনে হল এই ‘মা’ ডাকটা পৃথিবীতে সৃষ্ট কোনো ডাক নয়। ডাকটা জান্নাত থেকে এসেছে!
মামুন সাহেব বললেন, “মা, তুমি তোমার ব্যাগটা নিয়ে এক্ষুণি উঠে চলে এসো।”
রেহনুমা মামুন সাহেবের পেছনে গিয়ে দাঁড়ালো। ইকবাল বলল, “তুমি ভুল করছো রেহনুমা। এভাবে চলে গেলে তোমার চাকরি থাকবে না।”
মামুন সাহেব বললেন, “ওর ভুল-শুদ্ধ আপনাকে দেখতে হবে না। আমি এসে নিজ হাতে ওর রিজাইন লেটার দিয়ে যাব।”

এই বুড়ো ভামটাকে ইকবালের অনেক কিছু বলতে ইচ্ছে করছে। কিন্তু ও বলতে পারছে না। ওর বমি আসছে। মাত্র তিন পেগ মদ খেয়েই বমি? অন্য সময় ও ১০-১৫ পেগ হাসতে হাসতে মেরে দিতে পারে। আজ হঠাৎ কী হলো ওর?

রেহনুমাকে জড়িয়ে ধরে নীচে নামলেন মামুন সাহেব। রেহনুমাকে পাখির ছোট্ট ছানা বলে মনে হচ্ছে। মনে হচ্ছে যেন, মা পাখি পরম মমতায় ডানা দিয়ে তার ছানাকে এ পৃথিবীর সকল পঙ্কিলতা থেকে রক্ষা করছে।
মামুন সাহেবের বুকে মাথা রাখতে রেহনুমার ভালো লাগছে। রেহনুমা মনে মনে বলল, “আজ থেকে তুমি আমার শ্বশুর না, তুমি আমার বাবা। তুমি আমার বটবৃক্ষ।”

মামুন সাহেব এরপর কোথা থেকে যেন কিছু টাকা জোগাড় করে আকিবের হাতে দিলেন। আকিব আর রেহনুমা তা দিয়ে অনলাইন ব্যবসা শুরু করলো।
প্রথম তিন মাস ব্যবসা দাঁড় করাতে কষ্ট হলেও পরবর্তীতে স্বামী-স্ত্রী দিনরাত পরিশ্রম করে ব্যবসাটা দাঁড় করিয়ে ফেলল।

এরপর রেহনুমার সন্তান হওয়ার সময় মামুন সাহেবের অস্থিরতা, ত্যাগ-তিতিক্ষা নিয়েও আরেকখানা গল্প লিখে ফেলা যায়।
আসলে বাবাদের গল্পগুলো এতোটাই বিশাল যে এমনকি তাঁদের মৃত্যুর পরেও বেঁচে থাকে গল্পগুলো। এই ছোট্ট একটা ক্যানভাসে বাবাদের বিশাল গল্পগুলো তুলে ধরা সত্যিই কঠিন, খুব কঠিন।

Munif Muhtasim

Send private message to author
What’s your Reaction?
1
12
0
0
0
0
0
Share:FacebookX
Avatar photo
Written by
Munif Muhtasim
0 0 votes
Article Rating
Subscribe
Notify of
guest
0 Comments
Oldest
Newest Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments

Locbook Platform

Locbook is an independent platform for aspiring writers

error: Content is protected !!