চারিদিকে হায়েনার দল অপেক্ষায়।
কখন আমাকে কুরে কুরে খাবে।
দলবেঁধে ঝাঁপিয়ে পড়বে
আমার কোমল শরীরের উপর।
বিবস্ত্র করবে আমাকে।
তারপর আনন্দ উল্লাসে
এক এক করে
ছিন্নভিন্ন করবে আমার শরীর।
এক বন্য আদিমতায়।
আমার দুটো হাত প্রতিবাদ করতে করতে একসময় নিস্তেজ হয়ে যাবে।
অসাড় দেহ পড়ে থাকবে মাটিতে।
শুরু হবে হায়েনাদের আনন্দ উল্লাস।
একজনের পর আরেকজন আসবে। ঝাঁপিয়ে পড়বে আমার শরীরের উপর।
মিটাবে তাদের আদিম ক্ষুধা।
আমার শরীর তখন পুরো উদোম।
পরিধেয় তখন ছিন্নভিন্ন।
হায়নাদের এক অপার সুখ তখন
আমার নগ্ন শরীর দেখে।
আমি চিৎকার করব।
অবশ হাতে ছুঁতে যাব তাদের পা।
অস্পুট স্বরে মা বাবাকে ডাকবো।
আর স্মরণ করব বিধাতাকে।
কিন্তু কোথাও কেউ নেই তখন।
চারিদিকে শুধু হায়নাদের আওয়াজ।
তাদের তৃষ্ণার্ত চোখ আর ক্ষুধার্ত শরীর।
একটা সময় হায়নারা চলে যাবে।
আমি যন্ত্রণায় কাতরাতে কাতরাতে পড়ে থাকবো মাটিতে।
উঠে দাঁড়াবো আমি একসময়।
কোথায় যাব?
কার কাছে যাবো?
কোথায় চাইব এর প্রতিকার?
আমার আজ কোন অভিযোগ নেই।
কোথাও চাইবোনা এর বিচার।
দেখেছি আমার মত হাজারো ধর্ষিতা নারী পায়নি এর কোন বিচার।
আমিও তাই কোনো প্রতিকার চাই না।
চাইবো না।
গভীর রাত।
নিকষ কালো অন্ধকার চারিদিকে।
নীরবে বেরিয়ে আসবো ঘর থেকে।
হাতের ছোট্ট একটি লাল কৌটো।
চোখ বন্ধ করবো।
পৃথিবীর সব কিছু ভুলে যাব।
দোয়া করবো বিধাতার কাছে।
চাইবো ভিক্ষা।
কাতর স্বরে বলবো,
” হে পৃথিবীর মালিক।
পৃথিবীকে আমি বিদায় বলবো এখন। যাবার আগে তোমার কাছে আমার একটি আর্জি।
আমার ৭/৮ বছরের নিষ্পাপ ছোট বোন, ৭০ আর ৮০ বছরের মা, দাদী, নানীদের তুমি হেফাজত করো।
রক্ষা করো হায়েনাদের আদিম ক্ষুধা থেকে।”
এরপর বিদ্যুৎ গতিতে কৌটার মুখ খুলে পুরোটাই ঢেলে দেবো গলায়।
তারপর আমার চোখে মুখে নেমে আসবে রাজ্যের কালো অন্ধকার।
নিকষ কালো।
ঠিক যেন এক অমাবস্যার রাতের মত।
মুক্তি পেলাম আমি।
আর মুক্তি দিয়ে গেলাম সমাজকে।
বিদায় হে পৃথিবী।
হে পৃথিবী বিদায়।
চোখগুলো বন্ধ হয়ে আসবে আমার।
অসাড় দেহ পড়ে থাকবে মাটিতে।
আমার সব হিসেব নিকেশ তখন অতীত।
মোঃ আওরগজেব চৌধুরী।
টরন্টো, কানাডা।
৫ অক্টোবর ২০২০।




