অপরাজিতা

গল্প: অপরাজিতা
লেখক: আসিফ হোসাইন

ফাঁকা রাস্তায় হাটছি। চিনির মতো বিন্দু বিন্দু বৃষ্টি পড়ছে। রাস্তায় সোডিয়াম আলো থাকলে বৃষ্টিটা চমৎকার লাগতো। সাদা আলোয় এই বৃষ্টি বেমানান। ভোর রাতে আবার এই বৃষ্টি পড়ার দৃশ্যই চমৎকার লাগবে। রাত কত হলো জানা দরকার। পকেট হাতরে বুঝলাম ভুলে মোবাইল মেসে ফেলে এসেছি। ভালই হলো। আজ আমার সঙ্গী রাতের শহর। ক্ষুদায় পেট মোচর দিচ্ছে বারবার। আপাতত এই বৃষ্টিতে সিগারেট খাওয়া দরকার। পকেট হাতরে তিন টাকা পেলাম। এ টাকা দিয়ে আকিজ বিড়িও মিলবে না। ইদানিং আকিজ বিড়ি খুচরা বিক্রি করে না। কিনলে পুরো প্যাকেট। রাস্তায় যানবাহনের সংখ্যা দেখে আন্দাজ করতে পারছি রাত অনেক হয়েছে। দূরে একটি টং দোকান দেখা যাচ্ছে। হেঁটে হেঁটে দোকানের পাশে এসে দাড়ালাম। দোকানদার একজন মহিলা। আমার দিকে বিরক্তিকর দৃষ্টিতে তাকিয়ে বললো,

– আর পলিথিন নাই। ভিজে ভিজেই বাড়িতে যান।

বুঝতে পারলাম মহিলা পথচারীদের পলিথিন দিতে দিতে বিরক্ত। দোকানের লম্বা টুলে একটি মেয়ে বসে আছে। বোরখা পড়াতে বয়স বুঝা যাচ্ছে না। মেয়েটার চোখের দিকে তাকিয়ে বুঝলাম মেয়েটা হাসছে। আমি দোকানদার মহিলাকে বললাম,

– চাচী আমার পলিথিন লাগবে না। আমি একটু টুলে বসতে পারি? দোকানদার মহিলার মুখের শক্ত ভাবটা নিমিষেই দূর হলো। সচারচর এই শহরে কোন টং দোকানে গিয়ে টুলে বসার জন্য কেউ অনুমতি চায় না। চাচী আমার ব্যাপারটাকে ভদ্রতা মনে করেছে। একটি ন্যাকড়া এগিয়ে দিয়ে বললো,

– মুইছ্যা তারপর বহেন। ন্যাকড়া দিয়ে টুল মুছে বসে আছি। একটি কুকুর রাস্তার ওপার থেকে এপার এসে আমার সামনে কুন্ডলী পাকিয়ে বসে পড়লো। কুকুরটা আমার কাছে খাবার চাচ্ছে। পকেটে মাত্র তিন টাকা। আমি চাচীকে খুব নিচু স্বরে বললাম,- চাচী তিন টাকায় আপনার দোকানে কোন বিষ্কুট আছে?চাচী আমার দিকে তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে তাকিয়ে বললো,

– কুত্তারে খাওয়াইবেন দেইখ্যা তিন টাকার বিষ্কুট খুঁজেন?

আমি সরল গলায় বললাম,

– চাচী আমার কাছে তিন টাকাই আছে।চাচীর মুখের ভাব আবার নরম হলো। ঝুলিয়ে রাখা একটি প্যাকেট থেকে বিষ্কুট বের করে আমার হাতে দিল। বিষ্কুট নিয়ে কুকুরের মুখের সামনে রাখতেই বিষ্কুটটি মুখে নিয়ে উঠে দাড়ালো। কিছুক্ষণ লেজ নাড়িয়ে আবার রাস্তার ওপাশে চলে গেল। চাচী এবার খুব স্বাভাবিক গলায় বললো,

– মাইনষ্যের থেকা কুত্তার মনে ভালবাসা বেশি। কুত্তাডার একটা সঙ্গী ছিল। দুইদিন আগে ট্রাকের নিচে পইড়া পিছনের দুই পাও নাই হইয়া গেছে। আপনের এই বিষ্কুট ঐ সঙ্গীর জন্যই নিয়া যাইতাছে।

কৃত্তিমভাবে মৃদু হাসলাম। চাচী আমার হাসি দেখে বললো,

– আপনের এইডা অরজিনাল হাসি না। আপনি অন্য ধ্যানে আছেন।.

বোরখা পড়া মেয়েটি এখনো বসে আছে। চাচীর কাছে একটি সিগারেট চাইতে ইচ্ছে করছে। পাশে বসা মেয়েটির জন্য চাইতে পারছি না। চাচী যদি মুখের উপর না বলে দেয়! তাহলে মেয়েটি নিশ্চয়ই হাসবে। সেই হাসিটা আমার কাছে খুবই লজ্জার। তবুও সাহস করে চাচীকে বলেই ফেললাম,

– চাচী আমাকে একটি সিগারেট দেয়া যাবে? খুব খেতে ইচ্ছে করছে। আমি পরে এসে বিল দিয়ে যাবো।

পাশের মেয়েটি খিলখিল করে হেসে উঠলো। হাসি শুনে চমকে উঠলাম! হাসির শব্দও এত সুন্দর হয়।আমাকে অবাক করে দিয়ে মেয়েটি চাচীকে বললো,

– খালা উনারা একটা বেনসন দেন। বিল আমি দিমু।

সিগারেট ধরিয়ে এক টান দিতেই চা খেতে ইচ্ছে করছে। চায়ের কেটলী থেকে চা পাতার ঘ্রানে মোহ মোহ করছে চারপাশ। চা কোন ভাবেই চাওয়া যাবে না। চাচী নিশ্চিত ক্ষেপে যাবে। চাচীর চেহারার মধ্যেই এক ধরনের ঝগড়াটে ভাব আছে। স্বাভাবিক ভাবে কথা বললেও মনে হয় তিনি রেগে আছেন।

চাচী বললো,

– আপনের কি টাকা পয়সা ছিনতাই হইয়া গেছে?

আমি বললাম,

– না

।চাচী এবার খুব নরম গলায় বললো,

– মনে কোন কষ্ট থাকলে বলতে পারেন। মনটা পাতলা হইবো।চোখ ছলছল করছে। খুব কষ্টে চোখের পানি আটকে রেখে বললাম,

“গ্রামের ছেলে আমি। দুই বছর ধরে এই শহরে। পড়াশুনায় ভাল ছিলাম বিধায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে চান্স পেয়ে ভর্তি হই। ঘরে দরিদ্র মা আর বোন। আজকে শেষ যে টিউশনিটা ছিল সেটাও হারিয়েছি। ছাত্রী এক ছেলের সাথে পালিয়েছে। অর্ধেক মাসের বেতন যে চাইবো সেটাও লজ্জায় আর চাওয়া হয় নি।”

সিগারেট সম্পূর্ণটা শেষ না করেই উঠে দাড়ালাম। হঠাৎ মাথাটা ভার হয়ে গেল। চাচীকে বললাম,

– কাল এসে আমি বিল দিয়ে যাবো।

চাচী মুখের ভিতর একদলা গুল দিয়ে মুখ বন্ধ করে ইশারায় আমাকে দাড়াতে বললো। আমি চাচীর ইশারা বুঝে দাড়িয়ে রইলাম। এদিকে চিনিগুড়া বৃষ্টি থেকে ঝুম বৃষ্টি শুরু হয়েছে। শীতে শরীরে কাঁপন শুরু হলো। তীব্র শক্তি দিয়েও শরীরের কাঁপন থামাতে পারছি না। পা দুটো ঠক ঠক করে কাঁপছে। চাচী মুখ থেকে একদলা থু থু ফেলে বললো,

– পলিথিনটার নিচে আইসা বসেন। বৃষ্টি কমলে যাইয়েন।

কথা বলার শক্তি পাচ্ছি না। মনে হচ্ছে আমি কথা বললে কেউ শুনতে পাবে না। যে কোন সময় জ্ঞান হারাতে পারি। তবুও খুব নিচু স্বরে বললাম,

– না চাচী। আমি ভিজে ভিজেই চলে যাবো। সমস্যা নেই।

চাচী এবার দোকান থেকে উঠে আমার হাত ধরে টুলে বসিয়ে দিল। আমার উঠার শক্তি নেই। বমি বমি ভাব হচ্ছে।চাচী একটি শুকনো গামছা দিয়ে মাথা মুছে দিচ্ছে। কপালে হাত দিতেই চমকে উঠলেন।

– আল্লাহ গো শরীর তো জ্বরে পুইড়া যাইতাছে! ঐ চুমকি তুই ঐ টুলে গিয়া ব। পোলাডারে শোয়াই (শুইয়ে) দেই।

ঘুমিয়ে পড়েছিলাম। কেউ একজন আমার মাথায় জলপট্টি দিয়ে দিচ্ছে। চারপাশের সবকিছু আমার কাছে ঝাপসা লাগছে। পানির তৃষ্ণায় বুক ফেঁটে যাচ্ছে। অস্পষ্ট স্বরে পানি চাইলাম। সম্ভবত চুমকি মেয়েটা বললো,

– খালা পানি খাইবো। পানি দেন তাড়াতাড়ি।

মাথার যন্ত্রনাটা কমেছে একটু। একাই উঠে বসলাম। চাচী পানি খাইয়ে দিল। বাহিরে বৃষ্টি নেই। বমি ভাবটা এখনো আছে। পেটে নেই কিছুই। বমিটা হলে ভাল লাগতো। কতক্ষণ ঘুমিয়েছি খেয়াল নেই। চাচী আমার দিকে মায়াভরা দৃষ্টি নিয়ে বললো,

– এখন কেমন লাগতাছে বাজান?

আমি চাচীর দিকে তাকিয়ে অস্পষ্ট স্বরে বললাম,

– ভাল লাগতেছে চাচী। সকাল হতে কি আরো অনেক দেরী?

পাশ থেকে চুমকি বললো,

-আজান পড়বো কিছুক্ষণের মধ্যেই। আপনি আরেকটু শুইয়া থাকেন।

আমি শুধু মাথা নেড়ে আবার টুলের উপর শুয়ে পড়লাম। কপালে আবার জলপট্টি দেয়া শুরু হলো। জেগে থেকে কপালে জলপট্টির অনুভূতিটা খুব আরামের। মাথাটা উপরের দিকে নিয়ে একবার চুমকির দিকে তাকালাম। মেয়েটার চোখগুলো সুন্দর। ভাসা ভাসা । চোখের পাপড়িগুলো বড় বড়। চুমকির চোখে চোখ পড়তেই বললো,

– কিছু বলবেন?

আমি মাথা নেড়ে না বললাম। দোকান থেকে চাচী বললো,

– মাইয়াডা আইজকা তোমার জন্য কামেও যায় নাই। কত কইরা কইলাম, তুই যা। আমি জলপট্টি দিমু নে। যাইবো না তো একছাড় না।

আমি আবার চুমকির দিকে তাকালাম। এবার আর চুমকি আমার দিকে তাকাচ্ছে না। তবুও আমি ছোট করে বললাম,

– থ্যাংক ইউ চুমকি।

চুমকির চোখ ছলছল করছে। অন্যদিকে তাকিয়ে চোখের জল মোছার ব্যর্থ চেষ্টা করছে।চাচী আমার দিকে তাকিয়ে বললো,

– মাইয়াডা খারাপ কাম করলেও মনডা ভালা। আমি আমার মাইয়ার মতো ওরে দেখভাল করি।

আমি বললাম,

– থাকে কি আপনার সাথেই?

চাচী এবার দোকান থেকে নেমে আমার পাশে এসে বসলো।

– আমার বাসাতই থাকে। ওর একটা মাইয়াও আছে! স্কুলে পড়ে।

অবাক হয়ে চুমকির দিকে তাকিয়ে চাচীকে প্রশ্ন করলাম,

– চুমকির কি বিয়ে হয়েছিল?

– নারে বাবা। এই লাইনের মাইয়াগো কি বিয়া সাদী হয়! এমনিই তো এসব মাইয়াগো কতবার পেট হইয়া যায়।

আমার ভিতর রাজ্যের কৌতুহল। চুমকি মাথা নিচু করে রেখেছে। চুমকিকে বললাম,

– তুমি কেন এই বাচ্চা জন্ম দিলে?

চুমকি শান্ত চোখে চাচীর দিকে তাকায়। চাচী সাহস জুগিয়ে দিয়ে চুমকিকে বললো,

– বল মা। তোরে তো এই সমাজের সবাই খারাপই ভাবে। এই পোলাডায় অন্তত তোরে ভাল জানুক।

চুমকি হাসিহাসি চোখ নিয়ে আমার দিকে তাকায়। চোখের দুই কোনে দুই ফোঁটা জল।

– ভাই আমারে ১২ বছর বয়সে পতিতাপল্লীতে বেঁইচা দেয় আমার দূর সম্পর্কের এক খালু। যেদিন বেঁইচা দেয় ঐদিনই খালু আমারে সর্বপ্রথম আমার শরীর নষ্ট করে। কি যে কষ্ট ভাই! বলে বুঝাইতে পারুম না। শরীর ব্যাথায় আমার জ্বর আইসা পড়ে। সেদিন বিকালেই আমার রুমে প্রথম খদ্দের আসে। জ্বরে আমার শরীর কাঁপতে থাকে।

ভাই আপনি ডিসকভারি চ্যানেল দেখেন?

আমি মাথা নেড়ে বললাম,

– হ্যা দেখি।

চুমকি আবার বলতে শুরু করলো,

– ভাই ঐ জানোয়ারটায় আমার উপর হায়নার মতো ঝাপিয়ে পড়ে। আমি দুহাত জোড় করে অনেক কাকুতি মিনতি করে বলি, “ভাই আমার শরীরে অনেক জ্বর। আমারে আইজকার মতো ছেড়ে দেন।” জানোয়ারটায় হাইস্যা কয়, গরম শরীরই তো ভাল!

চুমকি মুখ চেপে কান্না করে। এদিকে কাক ডাকা শুরু করেছে। ঘুমন্ত শহর প্রতিদিনের মতো ব্যস্ততম দিন শুরু করবে।চুমকি আমার চোখের দিকে তাকিয়ে আবার হাসছে। অথচ দুচোখ ভরা জলগুলো বলে দিচ্ছে চুমকির ভিতরে কতটা ঘৃনা, ক্ষোভ পুষে রেখেছে।চুমকি শান্ত গলায় বলতে শুরু করলো,

আমি নতুন থাকায় এমনো দিন গেছে আমার রুমে ত্রিশটা খদ্দের পাঠাইছে! অনেকে কনডম ব্যবহার করতো অনেকে করতো না। এজন্য সর্দারণী আপা ওষুধ খাওয়াইতো। তবুও কয়েকবার আমার পেটে সন্তান এসে পড়ে। সর্দারণী আপা সব বাচ্চা নষ্ট কইরা ফেলতো। আমি মাঝেমাঝেই স্বপ্ন দেখতাম, নিষ্পাপ দুইটা চোখ আমার দিকে বাঁচার আকুতি নিয়া তাকিয়ে আছে। স্বপ্নের পর একসময় এটা আমি বাস্তবে দেখা শুরু করি। রাতের বেলা বিছানায় দেখতাম বাচ্চা খেলা করছে। মাঝেমাঝে কান্না করছে। আমি মানষিক ভাবে অসুস্থ হয়ে পড়লাম। দিন এভাবেই চলতে থাকলো। বেশকিছুদিন যাওয়ার পর আমি আবার অন্তসত্বা হলাম। এবার আর আপাকে এ বিষয়ে কিছু জানালাম না। তখন বাহিরে বের হতে দিতো। পুরাতন হওয়াতে এই সুযোগটা পেতাম। একদিন সাহস করে বের হয়ে পড়ি দোজখ খানা থেকে। বাসে উঠে ঢাকা এসে পড়ি। কাজ নিই গৃহকর্মী হিসেবে। এদিকে বাচ্চা পেটে বড় হতে থাকে। যে বাসায় কাজ করতাম সে বাসার আপাটা অনেক ভাল ছিল। হয়তো বাচ্চাটা পৃথিবীর আলো দেখবে এজন্যই। আমাকে ডাক্তারের কাছে নিয়ে যায়। বাচ্চা হওয়ার শেষ মুহূর্তে আমার সেবাও করছে।

বাচ্চা হওয়ার কয়েকমাস পর একদিন রাতে আমার গায়ে কারো হাতের স্পর্শ পেয়ে লাফিয়ে উঠি। দেখি আপার স্বামী। আমার মুখ চেপে ধরে বললো, চিৎকার দিলে তোর বাচ্চা মেরে ফেলবো।পরদিন সকালে আপা ঘুম থেকে উঠার আগেই বাচ্চা নিয়ে বাসা থেকে বের হয়ে পড়ি। আসার সময় আপার পা ছুয়ে সালাম করে আসি। কারণ তখন আমার চোখে আপাই শুধু ভাল মানুষ।এরপর আর কাজ খুঁজে পাই না। আমার বাচ্চাটাকে খাওয়াতে পারি না কিছু। রাস্তায় রাত কাটাই। সকাল হলেই কাজের সন্ধানে যাই। মানুষের কাছে হাত পেতে বাচ্চার খাবার জোগার করি।

কাজ পেলাম এক খাবার হোটেলে। বাসন মাঝার কাজ। তিনবেলা খাওয়াবে এতেই রাজি হয়ে যাই। খাবার হোটেলটা ছিল বাস, ট্রাক ড্রাইভারদের জন্য। খাবার আগে হাত ধুঁইতে হোটেলের পিছনে যাইতো কাষ্টমাররা। একদিন এক ট্রাক ড্রাইভার আমার দিকে তাকিয়ে বলে,

– কিরে, খানকি তুই এখানে আইলি ক্যামনে? খাড়া কইতাছি তোর মাহাজনরে!

চুমকি একটা দীর্ঘনিশ্বাস নিয়ে বললো,ভাই এর পরে আরো কয়েক জায়গায় কাজ করছি। প্রতিটা জায়গাতেই হায়না আছে ভাই। আমার বাচচ্চাটাকে নিয়া চাইছিলাম বাকী জীবনটা হালাল ভাবে চালামু। কিন্তু এই জমানায় আমার মতো মেয়েদের ভাল হওয়ার রাস্তা নাই। তারপর আমি আমার এই খালারে পাই। খালা আমারে আশ্রয় দেয়। আমি বেছে নেই পতিতাবৃত্তিই। কি করবো বলেন? খেয়ে তো বাঁচতে হবে! আমার মেয়ে এখন ক্লাস থ্রীতে পড়ে। খালায় গিয়ে স্কুলে ভর্তি করায় দিছে। রোল নাম্বার এক; দুই বছর ধইরা।

শোনেন একটা মজার কথা, আমার মাইয়া একদিন আমারে স্কুল থেইকা আইসা বলে,

– মা আজকে ম্যাডাম সবার বাবা মার নাম জিগাইছে। আমি শুধু তোমার নাম কইছি। বাবার নাম জিগানোর পরও তোমার নামই কইছি। ক্লাসের সবাই অনেক হাসাহাসি করছে।

আমি আমার মেয়ের কপালে চুমু দিয়া বলছি, পরের বার জিগাইলে বলবি,

“আমার বাবার নাম সমাজ। হিহিহি”

চুমকির চোখে আর কোন ক্ষোভ, ঘৃনা নেই। আছে স্বপ্ন। মেয়েকে নিয়ে স্বপ্ন। অনেকে বলে, মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড়। আমি চুমকির দিকে তাকিয়ে শুধু বললাম,

চুমকি তুমি স্বপ্নের চেয়েও সুন্দর।

-Asif Hossain

Send private message to author
What’s your Reaction?
0
2
0
0
0
0
0
Share:FacebookX
Avatar photo
Written by
Asif Hossain
3 1 vote
Article Rating
Subscribe
Notify of
guest
0 Comments
Oldest
Newest Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments

Locbook Platform

Locbook is an independent platform for aspiring writers

error: Content is protected !!