প্রচন্ড খিটখিটে মেজাজ নিয়ে বের হয়েছি। ঘড়ির সময় বলছে বিকেল হয়ে এসেছে, কিন্তু কড়া রোদ জানান দিচ্ছে এখনো রোদে ঝাঁ ঝাঁ দুপুর। রোদ একেবারে সহ্য করতে পারিনা, তবু এই রোদেই বের হয়ে গেলাম। বাসায় পরিবারের লোকজনের আচার আচরণে অতীষ্ঠ হয়ে গিয়েছি। জরুরী কাজ আছে বলে কাউকে কিছু বলার সুযোগ না দিয়েই বের হয়ে গিয়েছি।
কি করব? সারাক্ষণ এটা ওটা ফুটফরমাশ খেটেও শান্তি নেই। দুপুরের খাবার শেষ করে সব গুছিয়ে রাখার আগেই আবার ফরমায়েশ এলো এখনই পানি গরম করে বাথরুমে দিতে হবে, বয়স্ক মানুষ দুজনেই কোমরে পানি ঢালবেন। এই অসহ্য গরমেও উনাদের হাড় ব্যথার জন্য দুইবেলা করে গরম পানি দিতে হয়। আমার সারাজীবনেও আমি এত কাজ করিনি যতোটা গত এক বছর ধরে করছি। মাকে এসব নিয়ে কিছু বললেই একেবারে তেড়ে আসে। আজ তাই পানিটা বাথরুমে দিয়েই হিজাবটা মাথায় প্যাঁচিয়ে জরুরী কাজে বের হচ্ছি বলে বের হয়ে গেলাম। এলোমেলো হাঁটার অভ্যাস আমার নেই। কিন্তু আজ কেন জানি এত গরমের মাঝেও হাঁটতে ভাল লাগছে। মনে হচ্ছে কতদিন পর যেন আমি প্রাণ খুলে অক্সিজেন নিচ্ছি।
পাড়ার এক ছেলের সাথে খুব ভাব জমে গিয়েছিল। মা বুঝতে পেরেই বাবার সাথে পরামর্শ করে কোনরকম ঘোষণা ছাড়া হুট করে এক বিকেলে হাসিব এর সাথে বিয়েটা দিয়ে দিল। আমি যে পড়াশুনার কথা বলে বিয়েটা আটকাবো সেই কথা বলার সময়টা পর্যন্ত দিলনা। সেদিনও শপিংয়ে গিয়ে কিছু কেনাকাটা করে একটা কফিশপে বসেছিলাম আদনানকে নিয়ে। আদনান আমাদের পাড়াতেই থাকে। রাস্তার মোড়ে দোকানে সারাদিন আড্ডা দেয়, আর আমি যখন বাইরে যাই আমার পেছন পেছন বাইক নিয়ে যায়। মাঝে মাঝে আমি ডেকে কোথাও বসে গল্প করি, আবার যেদিন ইচ্ছে হয়না সেদিন ওকে পাত্তা দেইনা। সেদিন শপিং করতে যাবার সময় মাকে বললাম কিছু টাকা দিতে। মা আমাকে অবাক করে দিয়ে দশ হাজার টাকা দিয়ে বলল আমার যা কিছু প্রয়োজন সবই যেন কিনে নেই। যদি আরও কিছু প্রয়োজন হয় তখন যেন ফোনে জানাই, মা বিকাশ করে দিবে। হঠাৎ মা এত উদার হয়ে গেল কিভাবে তা ভাবতে ভাবতেই ঊর্মির ফোন বেজে উঠলো। ওকে ওর বাসা থেকে তুলে নিয়ে শপিং করলাম ইচ্ছেমতো। তবু মনে মনে একটা খটকা থেকে যাওয়ায় বেশ কিছু টাকা বাঁচিয়েও রেখেছিলাম। কিন্তু মার্কেটের বাইরে আদনানকে দেখে মায়ের আচরণ পরিবর্তনের ব্যাপারটা ভুলে গেলাম। ওকে নিয়ে কিছুক্ষণ সময় কাটালাম পাশের একটা কফিশপে। কফিশপে যাওয়ার পরপরই মা ফোন করেছিল আমি কোথায় আছি, টাকা লাগবে কিনা জানার জন্য। তখন সাথে ঊর্মিও ছিল তাই কোথায় আছি তা সত্যি করে বলে দিয়েছিলাম। টাকা লাগবেনা জানিয়ে দিয়েছিলাম। সেদিন অবশ্য একটু বিরক্ত হয়েছিলাম আদনানের জন্য। আমার বান্ধবী নিয়ে যাওয়ায় ও মন খারাপ করেছিল। আমার সাথে একান্তে সময় কাটাতে চাইছিল অনেকদিন ধরে। এরকম গায়ে পড়া স্বভাবের ছেলে একদম দেখতে পারিনা। তবু ঝোঁকের মাথায় আদনানকে মাঝে মাঝে ডেকে কথা বলতাম আর এতেই ও একেবারে বিগলিত হয়ে একান্তে সময় কাটানোর স্বপ্ন দেখছে, ওর ভাবভঙ্গী দেখে আরো মেজাজ খারাপ হওয়ায় বাসায় চলে আসি।
বাসায় আসার পর যেন মাথায় বাজ পড়লো। ঘরের ভেতর কেমন একটা চাপা উত্তেজনা, সবাই কেমন জানি খুশী খুশী মেজাজ। আমাকে দেখেই ঘরে মাকে কাজে সাহায্য করার ছেলেটা ছুটে এলো।
- আফা আমি এহনই যাইতাম আফনেরে আননের লাইগা।
- কোথায়?
-ওই যে যেইহানে এতোক্ষণ আদনান পুলাডার লগে বইয়া আছিলেন। কি জানি নাম… তেলাকোটা। আইচ্ছা এইডা কি নাম হইলো? - স্টুপিড তুই চুপ কর। আমি কোথায় যাই না যাই তা নিয়ে গোয়েন্দাগিরি হচ্ছে? দাঁড়া আজ বাবা আসুক তোর চাকরি যদি আজ শেষ না করেছি আমি।
- ওইতো খালুজান। কন গিয়া। আফনেরই আইজকা শেষ দিন এই ঘরে।
- টিপ্যা (ছেলেটার নাম টিপু, রেগে গেলে আমি ওকে এভাবেই ডাকি।) তুই থামবি!
বাবাকে দেখেই কাছে গিয়ে জড়িয়ে ধরে বললাম, ” বাবা তুমি এত তাড়াতাড়ি আসলে আজ? ভাল হয়েছে অনেকদিন একসাথে চা খাইনা। চল চা খাই।”
- তুই বানিয়ে খাওয়াবি?
- কেন মা আছে না?
- শশুরবাড়ি গেলে কি করবি তখন?
- আরে ধ্যাৎ, এসব বলবেনা তো, যাবো না কোথাও।
এইবার বাবা জীবনে প্রথমবারের মত আমার সাথে হুংকার দিলেন, “তাহলে রাস্তার ছেলেদের সাথে ঘুরে ঘুরে আড্ডা দিস কেন? আজ এখুনি রুমে গিয়ে তৈরি হয়ে নে। ছেলেপক্ষ আসবে দেখতে। আমার কথার হেরফের যেন না হয়।”
আমি টলোমলো পায়ে রুমে এসে স্তব্ধ হয়ে বসে রইলাম। মা এলো কিছুক্ষণ পরে। একটা মিষ্টি রঙ এর কাতান শাড়ি সামনে দিয়ে বলল, “কেলেংকারী যা করার অনেক করেছো। এইবার শাড়ি পড়ে সুন্দর করে গেস্ট এর সামনে যাবে। সুন্দরভাবে কথার জবাব দিবে। আত্মীয়স্বজনের কাছে মুখ দেখানোর আর উপায় রাখোনি। তোমার বাবাকে যদি অসম্মানিত করতে না চাও আজকে কোন রকম সিনক্রিয়েট করবেনা।”
আমি সব পারি, বাবার কষ্ট সহ্য করতে পারিনা। তাই বাধ্য মেয়ের মত শাড়ি পড়ে মেহমানদের সামনে গেলাম। দু’একটা কথা বলে আবার রুমে চলে এলাম। কিছুক্ষণ অপেক্ষা করে শাড়ি খুলে ফেলবো সিদ্ধান্ত নিয়ে রুমের দরজা বন্ধ করতে যাব এমন সময় দেখি মা, ছোট খালা, বড় ফুপু, চাচ্চু, বড় মামা, আর দুজন অপরিচিত মানুষ রুমে ঢুকেছেন। আমি চুপ করে মাথা নীচু করে ফেললাম। ভেবেছি উনারা সবাই আমাকে আদনানের সাথে বাইরে সময় কাটাই বলে বকাঝকা করতে এসেছেন। কিন্তু একি! দেখছি খালা আর ফুপু মিলে আমাকে ধরে বসিয়ে দিল। একজন হুজুরের মত পোষাক পড়া মানুষ হালকা নীল রঙ এর খাতা খুলে কিসব বলতে লাগলো। আমাকে বলল “আপনি রাজী থাকলে বলুন কবুল।” আমি মায়ের দিকে তাকিয়ে রইলাম। মা বললেন, ” কবুল বলে দাও” নরম সুরে বললেন কিন্তু কথার মাঝে কাঠিন্য ছিল, যার সাথে আমি ছোটবেলা থেকে পরিচিত। তাই কোনকিছু না ভেবে বলে দিলাম কবুল। আলহামদুলিল্লাহ বলে সবাই চলে গেল। শুধু পাশে বসে রইলো একটা অপরিচিত বাচ্চা মেয়ে। ওর বয়স ৬/৭ বছর হবে। কি হল কিছু বুঝতেই পারছিলাম না। শুধু মনের ভেতর কেউ বলে যাচ্ছিল আজ সব শেষ।
কিছুক্ষণ পরে বাচ্চাটা বলল–
- তোমার নাম কি অথৈ?
- হুম, তোমার নাম কি?
- আমার নাম তাথৈ।
- কী! দুষ্টুমি করছো?
- না মামী দুষ্টুমি না, সত্যিই আমার নাম তাথৈ। পুরো নাম অবশ্য আরেকটা আছে। কিন্তু বাসায় সবাই আমাকে তাথৈ নামেই ডাকে।
- কিন্তু তুমি আমাকে মামি ডাকলে কেন?
- ওমা! তো কি ডাকবো? একটু আগে আমার মামা তোমায় বিয়ে করলো না?
- বিয়ে! ও হ্যাঁ। আচ্ছা তাথৈ তোমরা কোথায় থাক?
- আমরা এই শহরেই থাকি। এতদিন অবশ্য দেশের বাইরে ছিলাম, কিন্তু বাবা বলেছে এখন থেকে আমরা এই দেশে এই শহরেই থাকব দাদা দাদুর সাথে।
- তোমার নানুবাড়ি কোথায়?
- আমাদের বাসার একটা বাসা পরে।
- আচ্ছা তোমার মামার নাম কি?
- তুমি মামার নাম জান না? এইতো একটু আগেই তো হুজুর কত কিছু বলল তখন মামার নামও তো বলল। তোমার মনে নেই। কী বোকা তুমি! কোন পড়াশোনা মনে রাখতে পারোনা তাইনা?
- হুম, আমি ভীষণ বোকা।
- মামার নাম হল টুংট্যাং
- ছিঃ এসব কারো নাম হয় নাকি?
- হয়তো, আমরা সবাই মিলে মামার নাম দিয়েছি টুংট্যাং। মামার মোবাইলে সারাক্ষণ এমন শব্দ হতেই থাকে হতেই থাকে তাই এমন নাম দিয়েছি।
মুহুর্তের মাঝে মনে পড়লো আমার মোবাইল নিয়ে বসে থাকলেই তো পারি। তাড়াতাড়ি টেবিলের উপর থেকে নেয়ার জন্য হাত বাড়াতেই দেখি মোবাইল টেবিলের উপর নেই। কোথায় রেখেছি মনে করতে চাইছিলাম কিন্তু তখনই একজন বয়স্ক মহিলা এলেন। আমি কি করা উচিৎ বুঝতে না পেরে সালাম দিলাম, তখনই মায়ের কঠিন কঠিন চেহারা মনে পড়লো তাই সাথে সাথেই পা ছুঁয়ে সালাম করতে গেলাম। উনি আমাকে সালাম করতে দেননি, বললেন– ” পায়ে হাত দিও না গো বউ। তুমি হইলা আদরের ধন; তুমি পায়ে থাকবা ক্যান? আমার পাশে বস, তোমারে দেখি। আমার নাতি আমারে ভুইলা গিয়া কেমন মাইয়া পছন্দ করসে দেখি”, বলেই আমাকে পাশে বসিয়ে জড়িয়ে ধরে রাখলেন। আমার তখন একটুও খারাপ লাগেনি। বরং শেষ বিকেল থেকে শুরু হওয়া সব এলোমেলো ঘটনার মাঝে এই একটা ব্যাপারই খুব ভাল লেগেছিল। কেউ একজন পরম মমতায় যখন মাথায় হাত রাখলো তখন মন কেমন যেন শান্ত হয়ে গেল। আমিও চুপ করে পাখির ছানার মতোই গুটিসুটি মেরে বসে রইলাম। একটু পর উনি বললেন–
- অথৈ বোন আমার, আমার নাতি হাসিব খুব ভাল একটা ছেলে। কখনো কোন ভুল বোঝাবুঝি হলে একটু গভীরভাবে ভেবে দেখবে সমস্যা কোথায়। আর তাও যদি না পার আমি যতদিন বেঁচে আছি আমার কাছে আসবে।
কথার মাঝে অদ্ভুত এক মায়া ছিল, যেই মায়া উপেক্ষা করে কোন তর্ক করা যায়না। আমি নিঃশব্দে মাথা নেড়ে আগের মতোই গুটিসুটি মেরে রইলাম।
আজ হঠাৎ পুরনো কথাগুলো মনে পড়ে এখন আবার মন কেমন করছে উনাদের জন্য। বারবার মনে হচ্ছে আজ এটা আমি কি করলাম? আমি কী আবার নিজের আগের বখে যাওয়া জীবনে ফিরে যাচ্ছি? কিন্তু এভাবেও তো আমি আর পারছিনা। বিয়ের পর থেকে গত এক বছর হাসিবদের বাসায় আছি। কিন্তু একদিনের জন্যও মন থেকে ওই বাসায় থাকিনি। শুধুমাত্র বাবা মায়ের জন্য এতোদিন ছিলাম। সেদিন রাতে হাসিবের দাদা দাদী, মা বাবা, ওর বড় বোন তারিন সহ আরো অনেকেই এসেছিলেন। ওরা আমাকে সেই রাতেই ওদের বাড়ি নিয়ে আসে। নিজের বিয়ে নিয়ে কত স্বপ্ন ছিল, কত ফ্যান্টাসি কাজ করত মনে কিছুই হলোনা। আমি প্রথমে আসতে চাইনি। পরে মা রুমে এসে দরজা বন্ধ করে আমাকে যা বলল তা শুনে আর কোন উত্তর দিতে পারিনি।
আমি মা বাবার একমাত্র মেয়ে। ছোটবেলা থেকেই নিজের যা ইচ্ছা তা করেছি। এটা ঠিক বড়সড় কোন অন্যায় কখনো করিনি, কারণ আদরের হলেও মা বাবা শাসন কখনোই কম করিনি। কিন্তু তবু কিছুটা স্বেচ্ছাচারী ছিলাম। পাড়ার ওই আদনান ছেলেটাকে যখন থেকে একটু ডেকে কথা বলা শুরু করলাম তার কিছুদিন পরেই মায়ের কানে খবর পৌঁছে যায়। মা আরো কিছুদিন আমাকে গভীরভাবে খেয়াল করে যখন সত্যতা পেলেন সোজা বাবাকে বলে দেন। বাবা এক মাসের মধ্যেই হাসিবের বাবার সাথে যোগাযোগ করেন। হাসিবের বাবা নাকি আমার বাবার কলেজের সিনিয়র ভাই ছিলেন। আমার জন্য ছেলে খুঁজে দিতে বলতেই উনি উনার ছেলের কথা বলেন। আর দুই পরিবারের কথা সব ফাইনাল করে আমাকে এরই মাঝে আমার ইউনিভার্সিটিতে গিয়ে ওরা দুইবার করে দেখেও আসে। সেদিন এংগেজমেন্ট হওয়ার কথা থাকলেও আমাকে আদনানের সাথে সেই কফিশপে দেখে হাসিব ফোন করে বাসায় জানিয়ে দেয় ও আজকেই বিয়ে করবে। এবং কফিশপের ব্যাপারটা হাসিব আমার পরিবারকেই আগে জানায়। আমার দোষ দেখাতে অবশ্য জানায়নি। হাসিব জানিয়েছে আদনান ছেলেটা সুবিধার না। শুধু এনগেজমেন্ট হয়েছে শুনলে ছেলেটা ভবিষ্যতে ঝামেলা বাড়াতে পারে তাই একেবারেই বিয়ে করে আজই আমাকে নিয়ে যেতে চায়। বাবা প্রথমে রাজী না হলেও পরে হাসিবের বাবার কথায় রাজী হয়ে যায়। সেদিনের সেই কফিশপটা ছিল হাসিবের নিজের। তাই ও আমাকে বেশ ভালভাবেই দেখে রাখে। আমি আদিনানের ভাবভঙ্গীতে বিরক্ত হচ্ছিলাম সেটা হাসিব বুঝতে পেরেই সিদ্ধান্ত নেয় আমাকেই বিয়ে করবে। কী আমার কপাল! সারা দুনিয়া একদিকে সব প্ল্যান করল আর আমি আমার বিন্দাস লাইফ নিয়ে ব্যস্ত ছিলাম। কিছুই জানলাম না। মা বাবার মান সম্মানের দিকে তাকিয়ে সেদিন কোন শব্দ না করে শশুরবাড়ি চলে আসি। তারপর থেকেই শুরু এই বিরক্তিকর জীবনের। একটা দিন শান্তি পাইনি। একটুও নিজের মত করে সময় কাটানো যায়না। হয় এইটা লাগবে নয়তো ওইটা দাও। অথবা সবাই গল্প করছে তুমিও আস। শরীর খারাপ লাগছে বললে তো আরেক হুলুস্থুল কান্ড। কেন শরীর খারাপ হল? ডাক্তার ডাক। নয়তো দাদী শাশুড়ি বা হাসিবের মা এসে মাথা টিপে দিবে, হাতে পায়ে ব্যথা বললেও ম্যাসাজ করে দিতে চাইবে। তখন নিজেই বিব্রত হই। হাসিব যতক্ষণ থাকেনা ততক্ষণ কোনভাবেই আমি একা থাকতে পারিনা। হাসিব আসলে আমাকে আর কোন কাজে কেউ ডাকেনা। তখন রুমে কিছুক্ষণ নিজের মত করে থাকি।
বিয়ের প্রথম রাতেই ওকে বলে দিয়েছি এই বিয়েতে আমার মত নেই। আমি কোনকিছুই জানতাম না। মা বাবার দিকে তাকিয়ে বিয়েটা করেছি। হাসিব চাইলেই আরেকটা বিয়ে করে নিতে পারে। আমার সাথে বর হিসেবে কোন আচরণ যেন না করে। হাসিব বলেছিল আমি চাইলেই পড়াশোনা চালিয়ে নিতে পারি। এবং পড়াশোনা শেষ করে নিজের ইচ্ছামত জীবন বেছে নিতে পারি। ও আমাকে কোন বাধা দিবেনা, আমিই বাবা মায়ের উপর রাগ করে আর পড়তে চাইনি। শশুর শাশুড়ী বলার পরেও আজকাল করে করে দুইটা সেমিস্টার ড্রপ দিয়েছি। মাঝে মাঝে বিরক্ত লাগলে মাকে ফোন করতাম, সাথে সাথেই মা ঝাঁঝিয়ে বলতো, এই ঘরে আমি থাকতে না পারলে দুনিয়ার কোথাও আর থাকতে পারবোনা। ওরা যেমন চায় যেমন বলে তেমনই যেন করি। রাগে ক্ষোভে মরে যেতে ইচ্ছা করতো, কিন্তু সেই মরার সুযোগও পাইনি। অবশ্য আমি নিজেও একটু ভীতু।
ভাল হয়েছে আজ বের হয়ে এসেছি। মা বাবা বুঝুক আমার সাথে এরকম আর আমি মেনে নিব না। সবাই শুধু আদর করি বলে বলে সারাক্ষণ বিরক্ত করে। এসব ভাবতে ভাবতেই দেখি সামনে ছোটখাটো একটা জটলা। বাঙ্গালীর সব বিষয়েই আগ্রহ। তবে আমি কাছে যেতে যেতেই জটলা খানিক কমে এলো। পাশ কাটিয়ে চলে যাচ্ছিলাম কিন্তু কানে কান্নার করুণ আওয়াজ আসায় ভাবলাম দেখি কী হল। এক বৃদ্ধা বসে বিলাপ করছেন, আর তার পাশে কয়েকজন খুব বিজ্ঞের মত করে কিছুক্ষণ বিলাপ শুনছে কিছুক্ষণ নিজেরা আলাপ আলোচনা করছে। ঘটনার সারমর্ম হল বৃদ্ধার ছেলে আর ছেলের বৌ তাকে বেড়াতে যাবার কথা বলে বের করে এনেছে সকালে। এই বাস, ওই বাস করতে করতে দুপুরে এখানে বসিয়ে রেখে গেছে খাবার আনতে। এখন দুপুর গড়িয়ে বিকেল হয়ে এলো কিন্তু কেউ আসছেনা তাকে নিতে। তার সাথে ছোট একটা ব্যাগে দুটো পরনের কাপড় ছাড়া আর কিছু নেই। বাসার ঠিকানাও নিজে বলতে পারেন না। শুধু বলছেন দিঘীর পাড়ে ছোট্ট একটা ঘর। প্রত্যেকেই বুঝে নিয়েছে ছেলে বোঝা নামাতে এখানে রেখে গেছে। মন কেমন করে উঠলো। তবু আবার ভাবলাম আমার এসবের ঝামেলায় পড়ে লাভ নেই। আমি নিজেই জানিনা কেন রাস্তায় হাঁটাহাঁটি করছি। ঘরে ফিরব কিনা তাও জানিনা। অযথা এই বৃদ্ধাকে নিয়ে দুশ্চিন্তা করে লাভ নেই।
জটলা ফেলে সামনের পথ ধরে এগিয়ে গেলাম। সামান্য পথ যেতেই আমারই সমবয়সী এক ছেলেকে দেখলাম উলটো দিক থেকে হেঁটে আসছে। ওকে চোখে পড়ার কোন কারণ ছিলনা, সম্ভবতঃ ওর পরনের পাঞ্জাবীটার জন্য চোখ চলে গেছে। এরকম একটা পাঞ্জাবী আদনানকে গিফট করেছিলাম। আদনান এর ছাই রঙ পছন্দ হয়নি বলে পড়েনি। তবে কাউকে দিয়ে দিয়েছে সেকথাও বলেনি। আবার ভাবলাম কাপড় তো আর এক পিস হয়না। এরই মাঝে একটা রিকশা যাচ্ছিল, রাস্তার মাঝে একটা উঁচু কালভার্টের মত আছে, নীচে দিয়ে বেশ বড় ড্রেন। রিকশাওয়ালা খুব কষ্ট করে রিকশাকে উঁচু জায়গায় তুলতে চাইছেন কিন্তু বারবার পা পিছলে যাচ্ছিল। সেই ছেলেটা রাস্তা পার হয়ে যাচ্ছিল কিন্তু আবার দ্রুত পায়ে হেঁটে এসে রিকশাওয়ালার রিকশা ধাক্কা দিয়ে উপরর তুলে দিতে সাহায্য করল। রিকশাওয়ালা কৃতজ্ঞ ভরা চোখে তাকাতেই ছেলেটা একটা তৃপ্তির হাসি দিল। এসব দেখে আমার মাথায় ভুত চেপে বসলো আমি আবার উলটো ঘুরে ছেলেটার পিছনে হাঁটতে লাগলাম।
সামনে সেই জটলাটা তখনো ছিল। ছেলেটা এগিয়ে গেল সেখানে। এই ব্যাপারটাই দেখতে চেয়েছিলাম আমি। আবারও গিয়ে সেখানে দাঁড়ালাম। ছেলেটি সব শুনে বৃদ্ধাকে বলল,
” চাচী আম্মা চলেন আমার সাথে। আপনার ছেলে আর আসবেনা। আমি আপনাকে নতুন বাসায় নিয়ে যাব।”
ভেবেছিলাম কোন বৃদ্ধাশ্রমে হয়তো রেখে আসবে। তবু কি মনে করে কাছে গিয়ে জিজ্ঞেস করলাম কোথায় নিয়ে যাচ্ছে। ছেলেটি জানালো ওর বাসায়। একটু খটকা লাগলো। তাই আরেকটু কথা বলতে আগ্রহী হলাম। ছেলেটিও বুঝতে পেরেছিল, বলল— ” আপা, আমি খুব সাধারণ একজন মানুষ। ঘরে শুধুই আমার মা আর একটা ছোট ভাই আছে। তবু উনাকে নিয়ে যাচ্ছি কারণ উনি অসহায়। আমার যতটুকু আছে ততটুকু দিয়েই আমি যদি কাউকে সাহায্য করতে পারি তবে ক্ষতি কিছু নেই। “
- আপনি কি এভাবেই সবসময় সবাইকে সাহায্য করেন?
- সাহায্য করেন আল্লাহ, আমি শুধু উছিলা হওয়ার চেষ্টা করি।
- কিছু মনে করবেননা, আপনি কি পড়াশোনা করেন নাকি কোন কাজ? মানে আমি আসলে জানতে চাইছিলাম আপনার মত বয়সী ছেলেমেয়ের লেখাপড়া করে, আপনি…
- বুঝেছি, থাক পুরো প্রশ্ন করতে আপনি বিব্রত হচ্ছেন অথচ কৌতুহল চাপা দিতে পারছেননা। আমি একটা ফার্নিচারের দোকানে কাজ করি। আমার মা বাসায় সেলাই মেশিনে কাপড় সেলাই করে এদিয়েই সংসার চলে যায়। আর এরকম সাহায্যের জন্য টাকার দরকার হয়না আপা, ইচ্ছা থাকলে আল্লাহ্ ব্যবস্থা একটা করে দেন। আপনি জানতে চাইছেন বলেই আপনাকে বলছি ছোটবেলা থেকে মা শিখিয়েছেন মানুষের বিপদে মানুষ পাশে দাঁড়ায়। তাই অর্থ দিয়ে না পারলেও কায়িকশ্রম দিয়ে চেষ্টা করি পাশে দাঁড়ানোর। আর বিশ্বাস করেন আপা, আজ পর্যন্ত কোনদিন কাউকে সাহায্য করতে গিয়ে আমার কোন বিপদ হয়নি, সংসারে কোন টানাটানি হয়নি। আল্লাহ্ সবকিছুতেই বরকত দিয়েছেন। আমার চাহিদা আছে তবে কম; কিন্তু আল্লাহর কাছ থেক এতো বেশি পাই তাই সাহায্য করার উৎসাহ বেড়েই যায়। এই যে বয়স্ক মহিলা উনার কত ধরনের বিপদ হতে পারে। আমি পারবোনা ভেবে চলে যেতে পারতাম, কিন্তু নিজেকে নিজেই ধোঁকা দেয়া হতো তখন।
- আপনার তো কোন লাভ নেই।
- আমারই তো সবচেয়ে বেশি লাভ আপা।
- সেটা কিভাবে?
- আজ আমার হাতে পায়ে শক্তি আছে, কিন্তু কাল নাও থাকতে পারে। হায়াত থাকলে আমিও একদিন বৃদ্ধ হব। কোন অবস্থায় থাকব তা জানিনা। তখন আমার জন্য আল্লাহ্ কাউকে পাঠাবেন কিনা তাও জানা নেই। আজ আমি যদি বয়স্ক মানুষকে অবহেলা করি কাল আমাকে আমার ছোটরা অবহেলা করবে। শক্তি সামর্থ্য থাকতে যা করব অচল অবস্থায় তা ফিরে আসবেই। আর তাছাড়া মানুষের কষ্ট দেখলে আমার মন খারাপ হয় ভীষণ।
- আপনি পড়াশোনা কতটুকু করেছেন?
- বেশি পড়িনি, ইন্টার পরীক্ষা দেয়ার আগেই সংসারের হাল ধরতে হয়েছিল।
- আপনার পাঞ্জাবীটা খুব সুন্দর।
- এটা গিফট ছিল। অনেক দামী, এত দামের পাঞ্জাবী পড়ার সামর্থ্য আমার নেই। এক আন্টি দিয়েছিলেন। উনার হীরের আংটি সহ একটা ব্যাগ দোকানে ফেলে গিয়েছিলেন। আমি ফেরত দিয়েছিলাম।
- আচ্ছা কখনো কাউকে সাহায্য করতে গিয়ে কোন সমস্যায় পড়েছেন?
- না, আসলে সমস্যা চিন্তা করে কখনো কোন কাজ করিনি সামনে যখন যেমন এসেছে তা মোকাবেলা করেছি। এই যেমন আপনার সাথে অনেকক্ষণ হল কথা বলছি। আমি আমার দোকানের কাছে প্রায় চলে এসেছি। একটা মেয়ের সাথে কথা বলছি সেইটা এক একজন এক এক দৃষ্টিতে দেখতেই পারে, কিন্তু আমি জানি আমি আপনার সাথে আমার বোনের মত করেই কথা বলছি তাই যে যা মনে করুক আমার কোন সমস্যা নেই।
- ও, আসলেই অনেকদূর চলে এসেছি। আপনি এখন ওই বৃদ্ধা মহিলাকে কিভাবে বাড়ি নিয়ে যাবেন?
- আপনি হয়তো খেয়াল করেননি আমি উনাকে একটা দোকানের সামনে চেয়ারে বসিয়ে এসেছি। এখন আমার মালিক থেকে কিছু টাকা নিয়ে ফল কিনব, তারপর সি এন জি করে উনাকে নিয়ে বাসায় যাব।
- উনি কতদিন থাকবেন আপনার বাসায়?
- যতদিন উনার হায়াত আছে। উনার বয়স আমার নানির মত। উনাকে সেবা করতে পারলে আমার তো ভাল লাগবেই আমার মায়েরও ভাল লাগবে।
- হুম তা ঠিক। কিন্তু আপন নানি তো আর না। এভাবে কতদিনই বা রাখবেন?
- দেখুন, সম্পর্ক শুধু রক্ত দিয়ে হয়না, আত্মা দিয়েও হয়। আত্মার সাথে সম্পর্ক থাকে বলেই কিন্তু আমরা আত্মীয় বলি। আজ হয়তো উনার ছেলে ফেলে চলে গেছে, কাল ভুল বুঝতে পেরে আবার মাকে খুঁজবে। হয়তো আমার কাছে পেয়ে গেলে উনাকে নিয়েও যাবে। কিন্তু আজ এই কিছুক্ষণ আগে থেকে আমি উনাকে আমার মনের ভেতরে স্থান দিয়েছি সেটা বাকি জীবন থাকবে। উনি আমাকে মনে রাখুক বা না রাখুক। আমার আল্লাহ দেখছেন আমি একজন বিপদগ্রস্ত অসহায় মানুষকে আল্লাহর ইচ্ছায় সাহায্য করার চেষ্টা করছি।
- আসলে আপনার মত করে কখনো ভাবিনি।
- আজ থেকে চেষ্টা করেন। দেখবেন কারো সাহায্য করতে পারলে শান্তি লাগবে।
- আচ্ছা আমি কি আপনার বাসায় যেতে পারি মাঝে মাঝে?
- না আপা, আমরা যেমন ঘরে থাকি সেখানে আপনারা যাবেন না। যাওয়াটা উচিত হবেনা। আমাদের প্রত্যেকের একটা নিজস্ব গন্ডি আছে তার মাঝে থাকাই ভাল। আপনি বরং দোয়া করবেন উনার জন্য আমাদের জন্য। এইতো আমার দোকান চলে এসেছে।
- আপনাকে আমার মনে থাকবে। আপনি আজ আমার অনেক বড় উপকার করলেন। এই বোনটার জন্য আপনি দোয়া করবেন।
- কী যে বলেন আপা। ঠিক আছে ভাল থাকবেন। কখনো প্রয়োজন মনে হলে এখানে এসে আমাকে খোঁজ করলেই পাবেন। আমার নাম এহ্সান।
- ঠিক আছে, আসি। অনেক ধন্যবাদ।
দ্রুত একটা সি এন জি নিয়ে বাসায় চলে আসলাম। বাসায় ঢুকে সোজা দাদী শাশুড়ির রুমে গেলাম। দেখি দাদা দাদী দুজনেই বারান্দায় বসে গল্প করছে। যতদূর জানি দাদা কানে কম।শোনেন, আমরা সাধারণ কথা যখন বলি উনি কিছু শুনতে পান না। কিন্তু দাদী বললে বুঝতে পারেন। তাই আমি দাদীকে জড়িয়ে ধরে বললাম – আমাকে মাফ করে দিন
- কি করেছিস তুই?
- অনেক অন্যায় করেছি।
- কখন করলি?
- গত এক বছর ধরে প্রতিদিন।
- ধুর পাগলি কি বলিস? কোথায় কাজে বের হয়েছিলি কাজ হয়েছে?
- হ্যাঁ, দাদী পুরো জন্মের কাজ হয়েছে আজকে।
- কি হল কি তোর আজকে? হাসিবের মা, তোমার বৌয়ের কী হল?
শাশুড়ী মা এসে বললেন, ” কী হয়েছে অথৈ? কাজে বের হয়েছিলে না? কোন সমস্যা হয়েছে মা?” এবার উনাকে জড়িয়ে ধরে বললাম, “আমি গত এক বছর ধরে আপনাদের সাথে অনেক অন্যায় করেছি, খারাপ ব্যবহার করেছি। আমাকে কখনো কোন খারাপ কথা আপনারা বলেননি, তবুও আমি অনেক কষ্ট দিয়েছি। আমি সম্পর্কের মূল্যায়ন করিনি। আমাকে মাফ করে দিন প্লিজ। আমি সত্যিই বুঝতে পারিনি।”
- পাগল মেয়ে কী বলে? হাসিব কিছু বলেছে তোমাকে?
- না, উনি কিছু বলেননি।
- শোন মা, যেদিন থেকে তুমি এই বাড়িতে এসেছো সেদিনই আমি তোমাকে আমার মনে স্থান দিয়েছি। ছেলেমেয়েরা ভুল করবেই, তাই বলে মা বাবা কি কখনো সেই ভুল মনে রেখে বসে থাকতে পারে? আমি বা এই পরিবারের কেউ কখনোই কিছু মনে করিনি। তুমি তো এখনো অনেক ছোট।
- মা, আজ আমি রান্না করব রাতের জন্য। আপনি যেভাবে বলে দিবেন আমি সেভাবেই করব।
- তাহলে তো স্পেশাল কিছু করতে হয়। চল দেখি ফ্রিজে কী আছে।
- মা তারিন আপুকেও বলেন তাথৈ আর ভাইয়াকে নিয়ে আসুক।
- ওরে পাগলী মেয়ে, আজ কী হল তোর? ঠিক আছে বলছি।
পরের তিন ঘন্টা রান্নাঘর আর ডাইনিং রুমের মাঝেই কাটিয়ে দিলাম। শাশুড়ী মা সব পাশে থেকে বলে দিলেন, আমি নেড়েচেড়ে রান্না করলাম। বিন্দি পোলাও, রোস্ট, রেজালা, সবজি আর রূপচাঁদা ফ্রাই। সব শেষ হওয়ার পর আমাকে রুমে গিয়ে ফ্রেশ হতে বললেন। আলমিরা খুলে হাসিবের দেয়া একটা শাড়ি বের করলাম। গত এক বছরে ওর দেয়া কোন কাপড় পড়িনি। সব নিজের কেনা। আজ গোসল সেরে শাড়িটা পরে রেডি হয়ে রুম থেকে বের হতেই দেখি হাসিব এসেছে বাসায়। বেশ অবাক চোখে তাকিয়ে রইলো। আমি সেই দৃষ্টি উপেক্ষা করে দাদীর কাছে গেলাম। সালাম করলাম। দাদী বলল ড্রইং রুমে যাও কে আছে দেখ। ড্রইং রুমে এসে দেখি বাবা মা বসে আছেন। দৌড়ে গিয়ে জড়িয়ে ধরলাম। আমার শাশুড়ী মা উনাদেরও খবর দিয়ে এনেছেন। মাকে ধরে খুব কাঁদলাম। বাবা বুকে জড়িয়ে বললেন, ” আমি জানতাম আমার মেয়ে তার ভুল বুঝতে পারবে। মা বাবা কখনো সন্তানের খারাপ চায়না তা বুঝতে পারবে।”
রাতে সবার বিদায়ের পর সব কাজ গুছিয়ে রুমে আসার পর হাসিব বলল
- আজ কী হল হঠাৎ?
- কিছু হয়নি, আমি আগামীকাল থেকে পড়াশোনা শুরু করতে চাই।
- গ্রেট!
- জীবনকে নতুন করে সাজাতে চাই। সম্পর্কগুলোকে আরো মজবুত করতে চাই। আপনি পাশে থাকবেন তো?
- অবশ্যই। জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত আমাকে পাশে পাবে ইনশাআল্লাহ।
এহ্সান নামের সেই ছেলেটা আমার জীবন বদলে দিয়েছিল। হাসিবকে একদিন ওর কথে বলেছিলাম। হাসিব সহ গিয়ে এহ্সানের পড়াশোনার পাশাপাশি ছোট একটা চাকরির ব্যবস্থাও করে দেয়। এহ্সান এর মত অনেকেই এখনো পৃথিবীতে আছে বলেই সবকিছু এত সুন্দর লাগে।
সমাপ্ত
– মেহরুবা মুনিরা (Mehruba Munira)
Send private message to author





