আমি তো লিলিথ

আমার ছোট কাকা বেশ অদ্ভুদ মানুষ ছিলেন । তিনভাই এর মধ্যে তিনি ছিলেন সবথেকে আলাদা । সৌম্যদর্শন, শান্ত আর চুপচাপ স্বভাবের । একা একাই থাকতেন । কারো সাথে তেমনি মিশতেন না । শামুকের মতো নিজের চারিপাশে একটা খোলস বুনিয়ে নিয়েছিলেন । সেই খোলস এ কেউ ঢুকতে পারত না । কেউ না । লেখাপড়ায় ছিলেন ভালো ; অন্তত নিজের তিন ভাই এর মধ্যে ভালো । কবিতা লিখতে পারতেন খুব । কবিতা আবৃত্তিও করতেন ভালো । চিকন সুঠাম দেহ নিয়ে খেলতেন জব্বর । ডিসট্রিক্ট লেভেল এর হাডুডু চ্যাম্পিয়ন ছিলো তার দল । হাতে গুলতি নিয়ে সাই করে ছুড়ে মারতেন আর ফল গাছ থেকে খসে পরতো । পানিতে ডুব মেরে কাদা তুলে আনা কোন ব্যাপারই ছিল না তার কাছে । সুনাম ছিলো ছোটকাকার । দাদাসাহেব তাই চেয়েছিলেন ছোটকাকা তাদের পৈত্রিক ব্যবসায় না জড়াক । ডাক্তার বানাতে চেয়েছিলেন ছেলেকে । আমার বাবা ছিলেন সবার বড় ; আমি তার একমাত্র সন্তান । মেজকাকা ছিলেন নিঃসন্তান । স্বভাবতই আমি ছিলাম সবার আদরের । আর ওদিকে ছোট কাকাও কম আদরের ছিলেন না । আবদার করলে কেউ সহজে মানা করতো না । দুপুরে সবাই মিলে যখন খেতে বসতাম তখন কাতল কিংবা রুই মাছের মাথাটা সোজা চলে যেত দাদার প্লেটে । দাদা সেই মাথাটা ভেঙে দু’টুকরা করে আমার আর ছোট কাকার প্লেটে দিয়ে দিতেন । ভালোবাসার কমতি ছিলো না ।

তবে ছোটকাকা মাঝেমধ্যে পাগলামি করতেন । বদ্ধ উন্মাদের মতো আচরণ করতেন । মাঝরাতে হঠাৎ হঠাৎ উঠে যেতেন বড় নদীতে মাছ ধরতে । আমি সাথে যেতে চাইলে নিতেন না ভুলেও । দাদার কথা শুনতেন না । সম্পূর্ণ অন্ধকারে একা একা চলতেন মাছ ধরতে । আমাদের ভয় ছিলো যে কোন অঘটন যেন না ঘটে । এর আগের শীতে রহমানের বড় ভাই একা একা মাছ ধরতে মারা পড়লো । লোকে বলে রাতে বোধহয় একা পেয়ে নিশিতে ধরেছিল । ছোট কাকা মানতেন না এসব । এরকম এক রাতে মাছ ধরতে গিয়ে এক আপদ সাথে নিয়ে আসলেন । সকাল বেলা তিনি এক কুকুর নিয়ে হাজির । মাছ ধরতে গিয়ে এই কুকুর পেয়েছেন নাকি । দাদার মতের বিরোধে গিয়ে সেই কুকুর পোষেন ছোটকাকা ।কুকুরটার নাম আমি দিয়েছিলাম ; অমি । সারাক্ষণ কাকার পিছন পিছন ঘুরতো । রাতে যখন মাছ ধরতে যেতেন তখন কুকুরটা সাথে নিয়ে যেতেন । ভরদুপুরে ‘অমি’কে সাথে নিয়ে চিলেকোঠায় শুয়ে থাকতেন । মোটামোটি সবাই কুকুরটা কে পছন্দ করে ফেলে । কালো গড়নের মাঝারি কুকুরটা দেখতে মায়াবী ছিল । কাকাকে দেখলে কুই কুই করে শব্দ করতো । আমার কাছেও আসতো অমি । ভালই ছিল সব । কিন্তু ভালো যে সহেনা ভাগ্যদেবীর । অমি মারা গেলো ; সাপের কামড়ে ঘুমন্ত অমি মারা গেলো । ছোট কাকার মাথায় আকাশ ভেঙ্গে পড়লো । সেদিন কাকা একটুও কাঁদেনি । একটুও না । মেজকাকা গিয়ে অমিকে মাটিচাপা দিয়ে আসলো । আমরা চুপ করে বসে ছিলাম ছোট কাকার জন্য । আমরা জানি ছোট কাকার কত আদরের ছিল কুকুরটা । শুধু তার নয় আমাদেরও আদরের ছিল । তবে আবেগ তো তার বেশি ছিল এখানে । ভেবেছিলাম কাকা খুব কাঁদবে । কাঁদেনি তবে সেদিন আমরা তার পাগলামো দেখেছিলাম । ওই শান্ত মানুষটা যে কিরকম পাগল আমরা দেখেছিলাম । যেখানে অমিকে মাটিচাপা দিয়েছিলো মেজকাকা , ওখানে গিয়ে সারারাত দাঁড়িয়ে ছিল ছোটকাকা । তাকে আমরা কেউ সরাতে পারিনি ওখানে থেকে । শেষে দাদা গিয়ে ধরে নিয়ে এসেছিলো । সেই থেকে কাকা আরও চুপচাপ হয়ে গিয়েছিলো । আমি ছোট কাকার সাথে সাথে থাকতাম , যদিও আমাদের বয়সের ব্যাবধান ছিল বছর আষ্টেক । তার জগতটা বড় রহস্যময় ছিল । কি সব হাবিজাবি নিয়ে ঘাটতেন । পাশের গ্রামের এক তান্ত্রিক থাকতো, তার কাছে মাঝে মধ্যে যেতেন দেখতাম । আমাকে মাঝে মধ্যে বলতেন যে – এগুলা কালো জাদু রে পাগল । বড় হ তোকেও একদিন শিখিয়ে দেবো ।
আমি অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করতাম কবে বড় হবো । তবে সে আশায় গুড়ে বালি দিলো আমার দাদা । ছোট চাচাকে বেদম কেলিয়ে এই জাদু মন্ত্রের ভূত মাথা থেকে নামায় ; সাথে সেই তান্ত্রিক কেও গ্রাম ছাড়া করিয়ে ছাড়ে ।

ছোট কাকা তখন আইএ পড়েন । তখন আমার সেই চুপচাপ, একাকী কাকা প্রেমে পরলেন । এক মধুর প্রেম । আমাদের গ্রাম এর শ্রাবন্য দিদির উপর । দিদি কিছু জানত না ; আসলে কাকা কখনো সাহস করে বলতে পারেননি । তবুও দিদি সব যেনে গিয়েছিলো । আমি একদিন সাহস করে সব বলেছিলাম দিদির কাছে । কবিতা লিখত কাকা তার ভালবাসার জন্য । কি সেই কবিতা! লুকিয়ে লুকিয়ে লিখতো আর নিজেই পড়তো । তবে একসময় দিদির বিয়ে ঠিক হয়ে যায় । কাকার কিছু বলারও ছিল না । বেচারা না পারে বলতে না পারে উগড়াতে । পারার কথাও না । শ্রাবন্য দিদি ছিল হিন্দু ঘরের । দাদার উপর দিয়ে এত বড় দুঃসাহস করার সাধ্য কাকার ছিল না । চাইলে কাকা অনেক কিছু করতে পারত , কিন্তু কিছু করেনি । তখনো তার পড়ালেখা শেষ হয়নি । হাজার পাগলামি আগে করলেও নিজের পরিবারের সাথে সম্পর্ক একেবারে ছিন্ন করে ফেলার মতো পাগলামি করবেন না জানি । এই ভালবাসার কথা শুধু আমি জানতাম । আর কাউকে বলেনি ছোট কাকা । দিদির যেদিন বিয়ে হয়ে গিয়েছিলো সেদিন রাতে পুকুর ঘাঁটে বসে কাকাকে জিজ্ঞেস করেছিলাম , তুমি কিছু করতে পারলে না? দাদাকে তো একবার বলে দেখতে………
কাকা একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে বললেন, নাহ । কেন বলবো? দরকার নেই । ভালবাসতে পারাই বড় ব্যাপার , সেটা সবাই পারে না ।

সে রাত টা ছোট কাকা কীভাবে পাড় করেছিলো জানি না । পরের কাকা চলে গেলো । আমাদের ছেড়ে চলে গেলো । কোথায় গেলো জানি না আমরা কেউ । এমনকি আমাকেও বলেনি। বুঝলাম তার আর মন টিকছে না , তাই বিবাগী হয়ে চলে গেছেন কোথাও । দাদা আর কাকারা মিলে অনেক খুঁজলেও আর পায়নি । শেষে সবাই মেনে নিলো ; ছেলে বড় হয়েছে । নিজের ভালো বুঝে নিতে পারবে ।
ভেবেছিলাম ছোট কাকা আর ফিরবেন না । আমি ভুল ছিলাম। ছোট কাকা ফিরলেন , তবে অনেক পড়ে। ততদিনে আমি বড় হয়েছি । বাবা মারা গেলেন জ্বরে । দাদা পক্ষাঘাতে বিছানায় । নিঃসন্তান মেজকাকার একটা মেয়েও হয়েছে । আমাদের পৈত্রিক কাপড়ের ব্যবসা প্রায় ধ্বংস হয়ে গেছে । আমাদের প্রতিদ্বন্দ্বী শেখরা আমাদের একচেটিয়া ব্যবসা লুফে নিয়েছে । বিদেশি কাপড় বম্বে থেকে এনে চালান দিতো । চলত দেদারসে । আশে পাশের জেলায় চলতো সব । আমরা তাদের সাথে পারিনি । পরিবারে টানাটানি । সচ্ছলতা আর নেই । অনেক কষ্টে দিন চলে । সবাই ভাগ হয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্তও হয়ে গেছে । শুধু দাদা আছেন বলে একসাথে আছে সবাই । এই সময় একদিন ভোরে ছোট কাকা ফেরেন । দুঃসংবাদ এর ঝুড়ির মাঝে হঠাৎ একটা সুসংবাদ হয়ে ফিরলো যেন ছোট কাকা । এতদিন কই ছিলেন ছোটকাকা সে নিয়ে কেউ মাথা ঘামায়নি । ছোটকাকা যে ফিরেছে তাতেও খুশি সবাই । ছোটকাকা আসার খুশিতেই বোধহয় বাড়ির পরিবেশ সজীব হতে শুরু করলো । ছোটকাকা ক’দিন বিশ্রাম করলেন নিজেরমতো । আমি সাথে সাথে থাকলাম তার । ছোটকাকা আরও সুঠাম হয়েছেন । বলিষ্ঠ বাহু, প্রকান্ঠ চওড়া বুক আর কপালের উপর এসে পরা চুল । আমার থেকে সবকিছু আস্তে আস্তে জেনে নিলেন এতবছরে কী কী হয়েছে । ছোটকাকা এরপর ব্যবসার হাল ধরলেন । অল্পদিনে দেখলাম ছোটকাকার আবির্ভাব আমাদের জন্য অদ্ভুদ এক আর্শীবাদ । রহস্যময়ভাবে শেখদের গুদাম পুড়ে যায় ; এতে ওদের যে ক্ষতি হয় তা পূরণ করা সহজ ছিলো না । ছোটকাকা কীভাবে যেন ওদের অধিকাংশ খদ্দেরদের আমাদের দিকে নিয়ে এলেন । বড় বড় চালানগুলো একে একে পেতে থাকলাম । বম্বের কাপড় সীমান্ত দিয়ে চোরাইভাবে আসতে শুরু করে । আমরা ফুলে ফেঁপে উঠতে শুরু করি । আগের থেকেও আমাদের অর্থের ঝনঝনানি বেড়ে যায় । সুদিন ফিরে আসে আমাদের । এরই মাঝে আমার বিয়ে ঠিক হয় । ছোটকাকা আর মেজকাকা মিলে বেশ আয়োজন করে আমার বিয়ে করিয়ে ক্ষান্ত হন । বছরের কাঁটা থেমে থাকেনি । প্রায় দু’বছর হয়ে এলো ছোট কাকার প্রত্যাবর্তনের ।

ছোটকাকাকে প্রায়ই দেখতাম সন্ধ্যার পর একটা ছোট মূর্তি নিয়ে বসে থাকতে । দু’দিকে ছোট ছোট দু’টো পেঁচা বসে , তার মাঝে একটা নারী মূর্তি বসা । চিলেকোঠায় বসে ছোটকাকা মূর্তির দু’পাশে দু’টো মোমবাতি জ্বালিয়ে রাখতেন । আমি কিছু জিজ্ঞেস করলে বলতেন না এ ব্যাপারে । আমিও জোর করতাম না তেমন । আগের মতোই ছোটকাকা চুপচাপ ।

পুকুর ঘাটের পাড়ে আমি আর ছোটকাকা বসে আছি । আজ ছোটকাকাকে অন্যরকম লাগছে । একদম নির্ভার । আমি জিজ্ঞেস করলাম,
-কিছু হয়েছে?
-নাহ কী হবে?
আমি কথা ঘুরিয়ে নিলাম
-আমার তো বিয়ে করিয়ে দিলে…নিজের বিয়ে আদৌ হবে?
-দরকার কী?
– ভালোবাসা এখনো আছে তাহলে?
ছোটকাকা আমার দিকে একবার তাকিয়ে দৃষ্টি নামিয়ে নিলেন ।আমি বললাম,
– শূণ্যজায়গা কি পূরণ করবার মতো নয়?
-শূণ্যতাবোধ তো সবার এক না রে!

ছোটকাকার আমার হাতে একটা সিগারেট ধরিয়ে দিয়ে বললেন, আগে তো আমার কাছ থেকে অনেক গল্প শুনতি । আজ একটা গল্প শুনবি?
– কেন শুনবো না ছোটকাকা?
– আজ তোকে ‘লিলিথ’ এর গল্প শুনাই
-লিলিথ? বিদেশী কোন গল্প মনে হয়?
-হ্যাঁ । শোন তাহলে-

দুনিয়াতে অনেক দেব-দেবীর পরিচিতি থাকলেও প্রাচীন দেব-দেবীরা এখন পরিচিত না ।

প্রাচীন অপদেবীদের মধ্যে লিলিথ সবথেকে পুরনো । এর পুজো করতো মানুষ খ্রিস্টের জন্মের তিন হাজার বছর আগে থেকে । একে বলা হয় “হৃদয়হরণকারী সকল ইন্দ্রিয়সুখের উৎস” ।ব্যাবিলনের হারিয়ে যাওয়া ধর্মগ্রন্থে এর নাম “কিসকীলিলাকে” । হিব্রু বাইবেল বুক অভ আইজেয়াহ এবং তালমুদ এর থেকে দূরে থাকার সতর্কবাণী দিয়েছে । ব্যাবিলনে এর সম্পর্কে কিউনিফর্ম লিপিতে লেখা ছিল “রাতের রাণী হলো লিলিথ; তার বোন এরেশকিগালসহ সকল পতিতালয়ের নিয়ন্ত্রণ কর্তী। ” ইতিহাস বলে প্রাচীন ব্যাবিলনে প্রকান্ড সব বড় পতিতালয় ছিলো । লিলিথের পুজো তখন এতোই জনপ্রিয় ছিলো যে তখনকার যে প্রধান দেবী ইসথারের জনপ্রিয়তা থেকেও বেশি হয়ে গিয়েছিলো । লিলিথ হলো সকল নিষিদ্ধ ইন্দ্রিয়সুখ,বিকৃত যৌনক্রিয়া, মদ, জুয়া এবং অসুখের সবচেয়ে প্রাচীন একচ্ছত্র দেবী । একটা কথা আছে কামরান ভ্যালিতে- ” লিলিথের মন্দিরের প্রবেশ দ্বার হলো নিশ্চিত মৃত্যুর প্রবেশ দ্বার ; তার আরাধনা করার অর্থ হলো নরকের সর্বনিম্ন স্তর নিশ্চিত করা । “ এই লিলিথ হাজার বছরের পরিক্রমায় গোপনে চলে যায় । এর বর্তমানে একটাই মূর্তি আর সেটা আমার কাছে!

আমি তড়াক করে লাফিয়ে উঠলাম – কী বলো ছোটকাকা!? তার মানে…. তার মানে তোমার ঐ মূর্তিটাই এটা?
ছোটকাকা শান্ত স্বরে মাথা ঝাঁকিয়ে বললেন, হ্যাঁ । উদ্ভিন্নযৌবনা লিলিথ একটি মোটা সাপকে জড়িয়ে ধরে আছে; সাপের মুখটি তার ডান কাঁধের ওপর এবং দুদিকে দুটো পেঁচা যাদের পা তরুণী মেয়েদের মত!

আমি বাম চোখের ভ্রুর নিচটা চুলকাতে চুলকাতে বললাম, সবই বুঝলাম। কিন্তু ওটার পাশে মোমবাতি জ্বালিয়ে কী করো?
-পুজো করি !
-মানে?! পুজো করার কী দরকার? তুমিই তো বললে এর পুজো করার মানে হলো নরকের নিম্নস্তর লাভ করা
-হ্যাঁ । আমাকে একটা কথা বল, এই যে আমি আসার আগে সব কিছু এলোমেলো ছিলো; ব্যবসা প্রায় মাটিতে মিশে গিয়েছিলো । এরপর আমি আসার পর সব ঠিক হলো কীভাবে?
– কীভাবে আর হবে! সব সৌভাগ্য আর তোমার দূরদর্শিতা
– অবশ্যই না । এসব লিলিথের জন্য!
– এখানে আবার লিলিথ আসবে কীভাবে?
– আসবে । লিলিথের পুজো করা খুবই সহজ । এর দু’পাশে দুটো মোমবাতি জ্বালালেই লিলিথ তাকে পূজারী হিসেবে গ্রহণ করে । এরপর পূজারীর ভাল-মন্দের দায়িত্ব তার । সর্বপ্রকার উন্নতি ঘটায় লিলিথ । বাড়ি আর ব্যবসার যে অবস্থা দেখেছি এসে তা আমি সহ্য করতে পারিনি । বাধ্য হয়েছি লিলিথের পূজো করতে ; যদিও জানি পরিণতি ভালো না,নরক আমার জায়গা ।

আমি করুণ চোখে তাকিয়ে বললাম, বরাবর একলাই থেকে গেলে ছোটকাকা । পরিবারের জন্য ভালোবাসার দিকে হাত বাড়ালে না; এখন আবার পরিবারের জন্য লিলিথকে বেছে নিলে ।
ছোটকাকা হেসে বললেন, এত কথা বলিস না । চল আজকে উঠি । বউকে একলা রাখা ঠিক না ।

ছোটকাকা একবার আমাকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরলেন এরপর নিজের চিলেকোঠার দিকে চললেন ।

ছোটকাকাকে পরদিন সকালে আর দেখিনি । শুধু পরদিন সকাল না, এরপর আর কখনো দেখিনি । ছোটকাকা আবারও চলে গেছেন; চিরতরেই চলে গেছেন এবার । তবে আগেরবারের মতো না বলে যাননি । আমাকে বলে গেছেন, শুধুই আমাকে বলে গেছেন ছোটকাকা । ছোটকাকার টেবিলে একটা ছোট চিরকুট ছিলো ; আমার জন্য –

“লিলিথ তার পূজারীকে নিরাশ করে না । তবে একেবারে ছেড়েও দেয় না । সচরাচর কোন পূজারীকেই লিলিথ দু’বছরের বেশি বাঁচতে দেয় না, যদি না অন্যকেউ ওই সময়ের ভেতর স্বেচ্ছায় তাকে পূজো দেয় এবং আগের পূজারী পুজো ছেড়ে দেয় । আমার দু’বছর হয়ে গেছে । আমি চললাম । শূণ্যতা বোধ নিয়ে শূণ্যের পথেই যাত্রা হোক….. “

ওমর ফারুক – Omore Faruk

Send private message to author
What’s your Reaction?
0
0
0
1
0
0
0
Share:FacebookX
Avatar photo
Written by
Omore Faruk Raul
0 0 votes
Article Rating
Subscribe
Notify of
guest
0 Comments
Oldest
Newest Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments

Locbook Platform

Locbook is an independent platform for aspiring writers

error: Content is protected !!